বিতর্কিত মন্তব্যের ধারা বজায় রাখলেন মৌর্য। ছবি: সংগৃহীত।
ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে ‘আব্বাজান’ মন্তব্যের মধ্য দিয়ে মেরুকরণের হাওয়া উস্কে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর ডেপুটি উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যও মথুরায় মন্দির তৈরির প্রস্তুতির টুইট করে সেই হাওয়া আরও জোরালো করেছেন দিনদুয়েক আগে। গতকালও এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়ে বিতর্কিত মন্তব্যের ধারা বজায় রাখলেন মৌর্য। সমাজবাদী পাটির (এসপি) শাসনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি বোঝাতে জালিদার গোল টুপি পরিহিত দুষ্কৃতীদের উল্লেখ করে ফের মুসলিমদের নিশানা করলেন তিনি।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ব্যবসায়ীদের এক বৈঠকে নিজের বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘‘২০১৭ সালে বিধানসভা ভোটের আগে এখানে কত জন লুঙ্গি-ছাপ গুন্ডা ঘুরত? জালিদার গোল টুপি পরে বন্দুক হাতে ব্যবসায়ীদের কারা ধমকাত আর ভয় দেখাত? আপনাদের জমি দখল করা সত্ত্বেও পুলিশে যাতে অভিযোগ দায়ের করা না হয়, সেই হুমকি কারা দিত? এ সব মনে রাখবেন।’’
মৌর্যের অভিযোগ, এসপি নেতারা অপরাধীদের আড়াল করতেন। তাঁদের প্রশ্রয়েই অবাধে ব্যবসায়ীদের তোলাবাজি, হুমকি দেওয়া হত। আজ এসপি প্রধান অখিলেশ যাদবকে ফের জিন্না নিয়ে কটাক্ষ করে মৌর্য বলেছেন, ‘‘ওকে অখিলেশ যাদব নয়, অখিলেশ আলি জিন্না বলে ডাকি।’’
চলতি সপ্তাহেই মৌর্য টুইট করেছিলেন, ‘‘অযোধ্যা, কাশীতে মন্দির নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। মথুরার জন্য প্রস্তুতি চলছে।” প্রসঙ্গত, মথুরায় শাহি ইদগা-র জায়গাতেই আসলে কৃষ্ণের জন্মস্থান বলে দাবি করে বহু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এমনকি নব্বইয়ের দশকে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির একাংশের স্লোগান, ‘‘ইয়ে সির্ফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা আভি বাকি হ্যায়।’’ মথুরায় মন্দির নির্মাণের ইঙ্গিত করে সেই স্লোগানকেই উস্কে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই শীর্ষ বিজেপি নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী।
গত বছরেই শাহি ইদগা-র জায়গায় কৃষ্ণের মন্দির তৈরির আবেদন জনিয়ে মথুরার এক আদালতে আবেদন করা হয়। যদিও আবেদন খারিজ করেছিল আদালত। তার পরেও মন্দির নির্মাণে মরিয়া হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তাদের দাবি আরও জোরালো হয়েছে মৌর্যের সাম্প্রতিক টুইটে। মৌর্যের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে হারের আশঙ্কা তীব্র হতেই মেরুকরণের তাস খেলছে বিজেপি। মথুরায় মন্দির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মৌর্যের সমালোচনা করেছে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভাও। তাদের দাবি, আসন্ন নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এ সবই বিজেপির ভোট রাজনীতি।