ভারতের জন্য লাল সঙ্কেত হোয়াইট হাউসের। প্রতীকী ছবি।
টানা এগারো দিনের আমেরিকা সফর সেরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশে ফেরার পরই ভারতের জন্য লাল সঙ্কেত হোয়াইট হাউসের। আজ আমেরিকার শুল্ক বিভাগ থেকে নোটিস দিয়ে একটি ভারতীয় বেসরকারি তেল সংস্থাকে নিষিদ্ধ করার কথা জানানো হয়েছে। অভিযোগ, তারা লক্ষ লক্ষ ডলারের তেল আমদানি করেছে ইরান থেকে। সেই তেল চিনকে বিক্রি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বাইডেন সরকার।
ঘটনা হল, আমেরিকা সফরের শেষ দিন জয়শঙ্কর সে দেশের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, জ্বালানির ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং জোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। জ্বালানি নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতের ‘কোমর ভেঙে’ গিয়েছে। জয়শঙ্কর আলাদা ভাবে বৈঠক করেছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন, বাণিজ্য সচিব জিনা রেমন্ডো, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গেও। সেখানে এই প্রসঙ্গ না তুলে জয়শঙ্কর ভারতে ফেরার পরই এই নোটিস জারি করা হল কেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে গভীর রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে।
কূটনৈতিক মহলের বক্তব্য, এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিতে ভারত। এটা ঘটনা যে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মাধ্যমে বা সরকারি স্তরে ইরান থেকে তেল আমদানি হয়নি। কিন্তু বিষয়টি এতই স্পর্শকাতর যে ইরান থেকে ভারতের কোনও বেসরকারি সংস্থা তেল আমদানি করবে বিনা কেন্দ্রীয় ছাড়পত্রে এবং সাউথ ব্লক চোখ বুজে থাকবে, তা সম্ভব নয়। আর ওই তেল দেশের ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য নয়, চিনে পাঠানোর জন্য বলে আমেরিকা জানানোয় বিষয়টিতে আরও জট পাকিয়েছে।
‘তিবালজি প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের ওই সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ইঙ্গিত দেওয়া রয়েছে, তারা ইরান থেকে পণ্য ভারতের জন্য নয়, চিনের জন্য আমদানি করে। সাধারণ ভাবে তেহরানের উপর চাপানো আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা মেনেই চলছে ভারত। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা এবং ইউরোপের কাছ থেকে ধারাবাহিক ভাবে চাপ এলেও, মস্কো থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেনি নয়াদিল্লি। বরং সস্তায় বিপুল তেল কিনেছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বজায় রাখতে আমেরিকার সঙ্গে দৌত্য চালাচ্ছে ভারত। সেই সময়ে ইরান-বিতর্ক সামনে আসায় দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অস্বস্তি তৈরি হল বলেই মনে করা হচ্ছে।