প্রতীকী ছবি।
‘গত বছর যা ধান চাষ করেছিলাম, এ বার বর্ষাকালে বৃষ্টি না হওয়ায় তার অর্ধেক বীজ বুনেছি। এই অসময়ের বৃষ্টিতে ওটুকুও নষ্ট হয়ে যাবে।’ সংবাদমাধ্যমের কাছে আক্ষেপ করছিলেন উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের কৃষক প্রীতমপাল সিংহ। প্রায় একই সুর উত্তরপ্রদেশের বাকি কৃষকদের কথাতেও, কারণ চাষের জন্য বর্ষাকালে যতটা বৃষ্টি প্রয়োজন ছিল, হয়নি। এ দিকে, বর্ষাকাল কেটে যেতেই হঠাৎ প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত উত্তরপ্রদেশের বহু গ্রাম। বিশেষ করে, ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে কৃষিকাজের। তাঁদের দাবি, কোভিড অতিমারির থেকেও ক্ষতি করছে অসময়ের প্রবল বর্ষণ।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যটির ৭৫টি জেলার মধ্যে ৬৭টি জেলাই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হয়েছে গত সাত দিনে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শুধু এটাওয়া জেলাতেই হয়েছে ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, যা ওই জেলার বৃষ্টিপাতের দীর্ঘকালীন গড় ৮.৩ মিলিমিটার থেকে কমপক্ষে ৮৭৬ শতাংশ বেশি। গোন্ডা জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৪৮.৬ মিলিমিটার।
টানা বৃষ্টিপাতে শহর ও মফস্সল এলাকায় জল জমে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত বর্ষণে চাষের খেত ভেসে যাওয়ায় ধান, গম, আলু, মিলেট-সহ বহু ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে এটাওয়ার এক কৃষক জানিয়েছেন, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষে তাঁরা আলু চাষ করেন। এ বারও তাই করেছেন। এখন প্রবল বৃষ্টিতে খেতে জল জমে যাওয়ায় পচে যাচ্ছে আলুর চারাগুলি। অনেক কৃষকই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বীজ, সার ইত্যাদি কেনেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এ ভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে ঋণ শোধ করতেও সমস্যা হবে।
বর্ষা বিদায়ের সময়েই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, এ বছর প্রয়োজনের থেকে ৩০ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ৭৫টি জেলার মধ্যে ৫৩টিতেই ছিল বৃষ্টিপাতের ঘাটতি, ফলে খারিফ ফসল নিয়ে ভুগতে হয়েছে চাষীদের। এই অসময়ের বর্ষণ ফের তাঁদের অনিশ্চয়তার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।