One Nation One Election

লোকসভা নির্বাচন কি এগিয়ে আসবে? ‘এক ভোট’ নিয়ে প্রশ্নে কী জবাব মোদীর মন্ত্রীর?

কেন্দ্রের ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতিতে বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া বা লোকসভা ভোট এগিয়ে আনার বিষয়ে যে জল্পনা দানা বেঁধেছে, রবিবার তার জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৪
Share:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার তৎপরতার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য অনুরাগ ঠাকুর সবচেয়ে চর্চিত প্রশ্নের জবাব দিলেন। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আনা বা পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে যে জল্পনা শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনুরাগ কেন্দ্রীয় নীতির গুণাগুণ বর্ণনা করেছেন। তবে নির্বাচন এগোনো বা পিছোনোর বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা খোলসা করেননি তিনি।

Advertisement

নির্বাচন সংক্রান্ত এই গুজবকে অনুরাগ আপাতত ‘সংবাদমাধ্যমের অনুমান’ বলে উল্লেখ করেছেন। ইন্ডিয়া টুডেকে তিনি বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করতে একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেই নীতি নির্ধারণ করবে।’’ এই নীতি প্রযুক্ত হলে দেশের নির্বাচন সংক্রান্ত অনেক সমস্যা মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার মাধ্যমে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যের বিধানসভা ভোটও সেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। এই নীতির কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তাই জল্পনা, বিধানসভা ভোটগুলি পিছিয়ে লোকসভার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতে পারে। অথবা, লোকসভা ভোট এগিয়ে আনা হতে পারে। রবিবার সেই জল্পনা নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হন অনুরাগ।

Advertisement

আসন্ন বিধানসভা ভোটগুলি পিছিয়ে দেওয়া বা পরের বছরের বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আনা হবে কি না, সেই প্রশ্ন করা হলে অনুরাগ বলেছেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের সময় ঠিক করে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের তরফে তো এমন কিছু বলা হয়নি। যে সব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীরাও এখনও ভোট পিছিয়ে দেওয়া বা এগিয়ে আনার কথা ঘোষণা করেননি। কেন্দ্রের ঘাড়ে অযথা এসব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?’’

‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি রূপায়ন কমিটি গঠন করে আগেই তার মাথায় দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে বসিয়েছিল কেন্দ্র। শনিবার সেই কমিটির সাত জন সদস্যের নামও জানিয়ে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাশাপাশি সেই কমিটিতে নাম ছিল লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীরও। কিন্তু শনিবারই অধীর কমিটির সদস্য হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সে বিষয়ে অনুরাগ বলেন, ‘‘মোদী সরকার উদারমনস্ক বলেই অধীরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তিনি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাই তাঁকে বেছে নিয়েছে কেন্দ্র।’’

গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা ঘোষণা করেছেন। সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পাশাপাশি ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল পাশ করানো হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। সেখানে কমিটিও তার রিপোর্ট পেশ করতে পারে। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে অনুরাগ জানিয়েছেন, ওই বিশেষ অধিবেশনের উদ্দেশ্য কি, সঠিক সময়েই তা জানা যাবে।

‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির কার্যকর করার ক্ষেত্রে মোদী সরকারের যুক্তি হল, এতে নির্বাচনের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্রের দাবি। তবে বিরোধী দলগুলি প্রথম থেকেই এই নীতির সমালোচনা করছে। তাদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement