তদন্তে নেমে সিংহ-দম্পতির খোঁজ পায় পুলিশ। স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
দুই মহিলাকে বলি দিতে পারলে প্রচুর টাকার মালিক হবেন। অর্থের কোনও অভাব থাকবে না। তান্ত্রিকের কাছ থেকে এই পরামর্শ পেয়েই ‘শিকারের’ খোঁজ শুরু করে দেন ভগবৎনাথ সিংহ এবং তাঁর স্ত্রী লায়লা। বেশ কিছু দিন খোঁজার পর শিকার না পেয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন সিংহ-দম্পতি।
শেষমেশ প্রথম শিকার জুটে যায় তাঁদের। জুন মাস। কেরলের এর্নাকুলাম জেলা থেকে রোসেলিন নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলাকে অপহরণ করেন সিংহ-দম্পতি। তাঁকে বলি দেন। তার পর রোসেলিনের দেহ টুকরো করে একটি নির্জন জায়গায় গিয়ে পুঁতে দিয়ে আসেন। কিন্তু বিত্তশালী হতে গেলে তো আরও এক জনকে বলি দেওয়া দরকার! আবার ফাঁদ পাতা শুরু করেন সিংহ-দম্পতি।
মাস দুয়েক বাদে সেপ্টেম্বরে আবারও এক শিকার জুটে যায় তাঁদের। এ বার সিংহ-দম্পতির শিকার ছিলেন পদ্মা। এর্নাকুলামে লটারির টিকিট বিক্রি করতেন তিনি। সিংহ-দম্পতি তাঁকে বাড়িতে নিয়ে এসে একই ভাবে খুন করার পর দেহ লোপাট করে দেন। পদ্মা নিখোঁজ হতেই তদন্তে নামে পুলিশ।
প্রথমে পদ্মার মোবাইলের টাওয়ারের লোকেশন চিহ্নিত করার চেষ্টা করে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে মহম্মদ সফি নামে এক ব্যক্তির খোঁজ পায় পুলিশ। পদ্মার মোবাইলটি তিনি ব্যবহার করছিলেন। সফিকে চেপে ধরতেই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। যা শুনে চমকে উঠেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মহম্মদ সফির সঙ্গে যোগাযোগ হয় সিংহ-দম্পতির। তাঁদের কাছ থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে প্রথমে রোসেলিন এবং পরে পদ্মাকে অপহরণ করে নিয়ে আসেন। তার পর ভগবৎনাথ এবং লায়লা নিজেদের বাড়িতেই ওই দুই মহিলার গলার নলি কেটে খুন করেন বলে অভিযোগ। তার পর দেহ টুকরো করে আলাদা আলাদা জায়গায় পুঁতে রেখে আসেন।
সফির কাছ থেকে সিংহ-দম্পতি এবং তাঁদের অভিসন্ধির কথা জানতে পারে পুলিশ। তার পরই সিংহ-দম্পতির বাড়িতে হানা দেয় তারা। অপহরণ এবং খুনের অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে আর কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন।