ত্রিপুরায় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপিই। ফাইল চিত্র।
তবে গত বার বিজেপির সমর্থন পেয়ে সরকার গড়েছিল যে এনডিপিপি, তাদের প্রাপ্ত আসনের সংখ্যা এক লাফে পৌঁছেছে ২৪-এ। বিজেপি পেয়েছে আগের বারের মতোই ১২টি আসন। এ ছাড়া এনসিপি ৭টি এবং এনপিএফ দু’টি আসন পেয়েছে।
প্রত্যাশামতোই ত্রিপুরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি এবং আইপিএফটির জোট। তাদের মোট প্রাপ্ত আসনের সংখ্যা ৩৩। বামফ্রন্ট পেয়েছে ১১টি আসন। তবে ১৩টি আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে চলেছে তিপ্রা মথা।
১৯৮৩ সাল থেকে চলে আসা ধারা অব্যাহত রেখে এ বারও ত্রিশঙ্কু মেঘালয়ের বিধানসভা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও দল। মেঘালয়ে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে শাসক দল এনপিপি। তবে তারা পেয়েছে মোট ২৫টি আসন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইউডিপি। তৃণমূল প্রথমবার ভোটে লড়ে পেয়েছে ৫টি আসন।
ত্রিপুরার আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হলেন কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ রায়বর্মন।
কমলা রঙের লাড্ডু বিতরণ করা হচ্ছে ত্রিপুরার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার বাড়িতে। বড়দোয়ালি কেন্দ্র থেকে জিতে গিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর দল বিজেপি শেষ পর্যন্ত ত্রিপুরায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না তা নিয়ে ঘনিয়ে রয়েছে সংশয়।
মেঘালয়ের তৃণমূল নেতা মুকুল সাংমার সঙ্গে জোড় লড়াই চলছে এনপিপি প্রার্থী নিহিম ডি শিরার। সোংসাক বিধানসভা কেন্দ্রে আপাতত মুকুল এগিয়ে থাকলেও নিহিমের সঙ্গে তাঁর ব্যবধান মাত্র ৩৭৯ ভোটের।
উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যের ভোটের ফলে স্পষ্ট, কংগ্রেস সুবিধাজনক জায়গায় নেই। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে। জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই ফল কি আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনেরই আগাম প্রতিফলন? জবাবে কংগ্রেসের প্রধান জানিয়েছেন, কংগ্রেস একেবারেই তা মনে করে না। কারণ, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির বরাবরই দেশের শাসকদলকে বেছে নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে।
মেঘালয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার আশা করছে এনপিপি। আগের বারও বিজেপির সঙ্গে জোট বেধে সরকার গড়েছিল বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দল। সকাল ১১টা পর্যন্ত ২৩টি আসনে এগিয়েছিল তারা। আসু জয়ের অনুমান করে মেঘালয়ে ইতিমধ্যেই উদ্যাপনের প্রস্তুতি শুরু করেছে এনপিপি। আপাতত এ রাজ্যে ৯টি আসনে এগিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিরোধী দল ইউডিপি। বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৭টি আসনে। তৃণমূল আর কংগ্রেস ৫টি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে মেঘালয়ে।
ত্রিপুরায় ১৩২১ ভোটের ব্যবধানে জিতে গেলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। টাউন বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী আশিস কুমার সাহাকে হারিয়ে দিলেন তিনি। ত্রিপুরায় বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংশয় ছিল। বড়দোয়ালিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল মানিক এবং আশিসের। সেই যুদ্ধ নাম মাত্র ব্যবধানে কোনওক্রমে জিতলেন ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী।
মেঘালয়ে দ্বিতীয় স্থান দখলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে তৃণমূল বিজেপি এবং ইউডিপির মধ্যে। তিনটি দলই ৭টি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে।
আগরতলায় চলছে গণনা। ছবি: পিটিআই
বিজেপি এখন ২৭টি আসনে এগিয়ে ত্রিপুরায়। জাদু সংখ্যা থেকে ৪টি আসন দূরে। গণনার শুরুতে ৩৯টি আসনে এগিয়ে থাকলেও আড়াই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টার সময়ে অনেকগুলি আসনেই পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি। রাজ্যের বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য পিছিয়ে পড়েছেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র বনমালিপুরে। অন্য দিকে, তিপ্রা মথা ক্রমে এগিয়ে আসছে উপজাতি এলাকার আসনগুলিতে। বেশ কয়েকজন নির্দল প্রার্থীও বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন ত্রিপুরায়। তবে এখনও গণনা অনেক বাকি। তাই ত্রিপুরায় কী হতে চলেছে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে।
এনপিপি নেতা তথা মেঘালয়ের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা পিছিয়ে রয়েছেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র দক্ষিণ তুরাতে। কনরাডের ভাই এনপিপি নেতা জেমস সাংমাও ১০০০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী রূপা মারকের থেকে। অন্য দিকে, কনরাডকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন বিজেপির বার্নার্ড মারেক।
আগরতলায় কংগ্রেসের প্রার্থী সুদীপ রায়বর্মণ প্রায় ১৫০০ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির প্রার্থী পাপিয়া দত্তের থেকে।
অনেকটা এগিয়ে শুরু করেও আপাতত ত্রিপুরায় ৩০ আসনে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। সকাল সাড়ে ন’টা পর্যন্ত ১৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বামেরা।
মেঘালয়ের ৬০ টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেস-বিজেপিকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দল এনপিপির সঙ্গে তাদের ব্যবধান বেশ কম। তারা এগিয়ে রয়েছে ১৮টি আসনে। বিজেপি এবং কংগ্রেস যথাক্রমে এগিয়ে রয়েছে ১০টি এবং ৭টি আসনে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত।
গত বারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট করে নাগাল্যান্ডে সরকার গড়েছিল এনডিপিপি। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেই এনডিপিপি সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩০টি আসনে এগিয়ে। বিজেপি এগিয়ে আছে ১২টি আসনে। বিরোধী এনপিএফ ২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
মেঘালয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে পূর্বতন শাসক দল এনপিপি এবং প্রধান বিরোধী তৃণমূলের। সকাল পৌনে ন’টা পর্যন্ত হিসাব বলছে ইতিমধ্যেই ১২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এনপিপি এগিয়ে আছে ১৯টি আসনে। কংগ্রেস এবং বিজেপি দু’দলই ৭টি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে।
গণনার শুরুর দিকে সকাল পৌনে ন’টা পর্যন্ত ত্রিপুরার ৬০টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতেই এগিয়ে বিজেপি এবং আইপিএফটি-র জোট। বামফ্রন্ট ১২টিতে এবং কংগ্রেস তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তিপ্রা মথাও ৬ আসনে এগিয়ে ছিল সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। তবে তৃণমূল কোনও আসনেই এগিয়ে নেই।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
মেঘালয় নিয়ে তৃণমূলের আশা বেড়েছে বুথফেরত সমীক্ষার পর। সব সমীক্ষাই বলছে, মেঘের দেশে নিছক পর্যটক হিসাবে থেকে যাবে না বাংলার শাসকদল। বরং, আগামী পাঁচ বছর মেঘালয় কারা শাসন করবে তাতে বড় ভূমিকা নেওয়ার শক্তি পেয়ে যেতে পারে তৃণমূল। এমনকি, ঠিক ঠিক সমর্থন জোগাড় করতে পারলে পৌঁছে যেতে পারে ক্ষমতার অলিন্দেও। এমনটা আন্দাজ করেই মেঘালয়ের প্রচারে অনেকটা সময় দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই পরিশ্রম ফল দেবে কি না, তা জানা যাবে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর।
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
গত বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া রং বেছে নিয়েছিল ত্রিপুরা। পুরনো শাসক বামেরা থমকে গিয়েছিল ১৬টি আসনে। যেখানে মোট ৬০ আসনের ৪৪টিই পেয়েছিল কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপি। তবে এ বার নজর রয়েছে তৃণমূলের দিকেও। এর আগেও ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। তবে এ বারের ত্রিপুরায় ভোটে অন্যান্য বারের মতো তৃণমূলের চোখে না পড়া উপস্থিতি ছিল না। বরং ২০২১-এর ত্রিপুরার পুরভোটের পর থেকে ত্রিপুরায় নিয়মিত নজরে পড়েছে তৃণমূল। দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার করেছেন। মাঝেমধ্যেই ত্রিপুরায় হাজির হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নিয়মিত যাতায়াত করেছেন তৃণমূলের শীর্ষনেতা, সাংসদেরাও। যদিও বুথফেরত সমীক্ষার রিপোর্টে কেউ কেউ বলছে, ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে এ বারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে বিজেপি। কেউ আবার বলছে, নিরঙ্কুশ না হলেও একক বৃহত্তম দল হিসাবে গরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে পদ্ম শিবির। বাম-কংগ্রেস জোটের আসন বৃদ্ধির আশাও প্রকাশ করেছে কোনও কোনও বুথফেরত সমীক্ষা। তবে তৃণমূলের আসন পাওয়ার কথা জানায়নি কোনও সমীক্ষাই।