বাংলাদেশের বাড়িতে এখনও বিদ্যুতের বিল আসে মানিক সাহার বাবার নামে। নিজস্ব চিত্র
ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মনিক সাহার পৈত্রিক বাড়ি বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কাজীপাড়া। সেখানকার পুকুরপাড় এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর পিতা প্রয়াত মাখনলাল সাহার আদি বাড়ি বলে জানান শরিফুল ইসলাম মালদার। শরিফুলের বাবা নুর মিঞার সঙ্গে জায়গা বিনিময় করে ত্রিপুরায় চলে আসেন মানিক সাহার বাবা মাখনলাল। শরিফুল বলেন, “আমাদের বাড়ির বিদ্যুতের বিল এখনো মাখনলাল সাহার নামেই আসে। কারণ বাবা নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিলে নাম যেন সংশোধন না করা হয়।” চোখ মুছে শরিফুল জানান, প্রতি মাসেই বিদ্যুৎ বিল যখন আসে ‘মাখন কাকার’ নাম মনে পড়ে যায়। তিনিও তার ছেলেদের বলেছেন, এই নামটি যেন পরিবর্তন না করা হয়।
আগরতলার গা ঘেঁষেই বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এলাকার ছেলে পড়শি দেশের ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, এই খবরে সেখানে উৎসবের মেজাজ। বাড়িটি নতুন করে তৈরি করা হলেও তার মধ্যে পুরনো ঘরটি এখনও রয়েছে। কাজীপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল চৌধুরী জানান, সেখানে এখন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হয়েছে। পাড়ার প্রবীণ ব্যক্তি রমেন সাহা বলেছেন, মাখনলাল সাহার বাড়িতে দুর্গা পুজো হতো। তিনি জানান, কাজীপাড়ার বাড়ি ছেড়ে আগরতলায় চলে গেলেও দুর্গা পুজোর সময়ে মাখন লাল কাজীপাড়ায় আসতেন। পরে তাঁর পরিবারের লোকেরাও আসতেন।
বাড়িটির এখনকার মালিক শরিফুল বলেছেন, তার বাবা আগরতলার বাসিন্দা নুর মিঞা মালদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়ার সময়ে থাকতেন কাজীপাড়ার কিবরিয়া মহলে। তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াও ত্রিপুরার অংশ ছিল। কাজীপাড়ার বাসিন্দা মাখনলাল সাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল নুরের। দেশ ভাগের সময়ে পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে ওঠায় দুই বন্ধু একে অপরের বাড়ি বিনিময়ের প্রস্তাব দেন। কম সময়ের মধ্যেই তা কার্যকর হয়। সেই থেকে তাঁরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাজীপাড়ার বাসিন্দা। আর তাঁদের আগরতলার বাড়ির বাসিন্দা হন মাখনলাল সাহা ও তাঁর পরিবার।