মণিপুরে নতুন করে আন্দোলনে জনজাতিরা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
দিল্লিতে বিক্ষোভ হয়েছিল আগেই। এ বার মণিপুরের কুকি-জ়ো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের তরফে জনজাতি এলাকায় প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পথ অবরোধের ডাক দেওয়া হল। দাবি মানা না হলে নাগাল্যান্ডের বাণিজ্যকেন্দ্র ডিমাপুরের সঙ্গে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের সংযোগ রক্ষাকারী জাতীয় সড়ক-২ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কয়েকটি জনজাতি সংগঠনের যুক্তমঞ্চ ‘জনজাতি ঐক্য কমিটি’ (সিওটিইউ)। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যতদিন পর্যন্ত না পরিস্থিতি বদলায়, ততদিন অবরোধ চলবে।’’
কট্টরপন্থী জনজাতি সংগঠন ‘কুকি-জ়ো ড়িফেন্স’ ফোর্স আগামী ২৬ অগস্ট থেকে অনির্দিষ্ট কালের পথ অবরোধের ঘোষণা করেছে সোমবার। প্রসঙ্গত, সিওটিইউ-র সম্পাদক লামিনলুন সিংসিট গত ১৭ অগস্ট অভিযোগ তুলেছিলেন, জনজাতি এলাকাগুলিতে খাদ্য, ওষুধ-সহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রয়োজনমতো সরবরাহ করা হচ্ছে না। পরিস্থিতির বদল না হলে তিন দিন পরে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই ‘চরম সময়সীমা’ শেষ হওয়ার পরেই সোমবার বেশ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে অবরোধ।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে কুকি-জ়ো জনজাতি গোষ্ঠীর মহিলারা দিল্লিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার গোষ্ঠীহিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে ত্রাণসামগ্রী পাঠাচ্ছে, তা জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় ঠিক ভাবে বণ্টন করছে না মেইতেই প্রভাবিত মণিপুর সরকার। তাই নিরপেক্ষ ভাবে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ তদারকির জন্য জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলির জন্য পৃথক প্রশাসন প্রয়োজন। সেই সঙ্গে, মণিপুরের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে জনজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ের জেলাগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহণে সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
মেইতেই-গরিষ্ঠ মণিপুরে তাঁদের সুরক্ষা দিতে পারবে না বলে চলতি মাসের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন সে রাজ্যের কুকি বিধায়কেরা। তাই কুকি-জ়ো জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক মুখ্যসচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশক (ডিজি) নিয়োগের দাবি জানান তাঁরা। মণিপুরের ১০ জন কুকি-জ়ো বিধায়ক ওই চিঠিতে সই করেছেন। তাঁদের মধ্যে সাত জনই শাসকদল বিজেপির। চিঠিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের কার্যকলাপের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা।