Krishnamurthy Subramanian

চিনা পণ্য বর্জনে ঝোঁক, উপদেষ্টার কথা শোনে কে

কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিতেও হতে পারে। কিন্তু তা বলে আমদানিতে রাশ অর্থনীতির উন্নতির চাবি হতে পারে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৩:৪০
Share:

মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন।—ছবি সংগৃহীত।

আমদানির রাস্তায় দেওয়াল তুলে নয়। ভিন্‌দেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যুঝে এবং জিতে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়া সম্ভব বলে জানালেন মোদী সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন।

Advertisement

আজ বণিকসভা এমসিসিআই আয়োজিত ভিডিয়ো কনফারেন্সে সুব্রহ্মণ্যনের কাছে প্রশ্ন ছিল, পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্ন পূরণ করতে আমদানি কমিয়ে শুধু দেশি পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো জরুরি কি না। বিশেষত যেখানে চিনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি বিপুল এবং ডাক উঠছে চিনা পণ্য বয়কটের। আর্জি ছিল, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তেমন প্রকল্প তৈরি করুক কেন্দ্র। কিন্তু উপদেষ্টার উত্তর, চিন বা অন্য দেশ আগ্রাসন দেখালে ভারত মেনে নেবে না। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিতেও হতে পারে। কিন্তু তা বলে আমদানিতে রাশ অর্থনীতির উন্নতির চাবি হতে পারে না।

তাঁর কথায়, “১৯৯১ সালের আগে পর্যন্ত ভারত আমদানি না-করে শুধু দেশি পণ্য ব্যবহারের পথে হেঁটেছে। তার ফল সকলে জানি। অনেক ক্ষেত্রে একটি স্কুটার কিনতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১০-১৫ বছর। আমদানি না-বাড়িয়ে শুধু রফতানি বৃদ্ধির স্বপ্নও আমার মতে অবাস্তব।” কৃষ্ণমূর্তির মতে, প্রতি জন আত্মনির্ভর হলে, প্রতিটি ছোট শিল্প আত্মনির্ভর হতে পারলে, তবেই দেশের পক্ষে তা হওয়া সম্ভব। আর একমাত্র বাইরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যুঝতে পারলে, তবে সেই আত্মনির্ভরতা অর্জন করা সম্ভব। এ দিনই যেমন পরিষেবা রফতানিকারীদের সঙ্গে দেখা করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পায়ের তলার মাটি শক্ত করার ডাক দিয়েছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

Advertisement

অনেকে বলছেন, মুক্ত অর্থনীতির পীঠস্থান শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা সুব্রহ্মণ্যন যে প্রতিযোগিতা থেকে মুখ না-ফেরানোর কথা বলবেন, তা প্রত্যাশিত। কিন্তু পণ্য বর্জন ও বরাত বাতিল করে চিনকে শিক্ষা দেওয়ার নীতি ক্রমশ যেন আরও বেশি আঁকড়ে ধরছে মোদী সরকার।

এ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া চিঠিতে টেলিকম দফতর জানিয়েছে, ৫জি পরিকাঠামোর চৌহদ্দিতে চিনা সংস্থাগুলিকে পা-রাখতে দিতে চায় না তারা। সৌর প্যানেল, সৌর ইনভার্টার এবং সৌর ব্যাটারিতে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক। জিঙ্ক অথবা অ্যালুমিনিয়ামের ‘কোটিং’ থাকা ইস্পাত পণ্যে ৫ বছরের জন্য শাস্তি শুল্ক বসানোর ঘোষণা করেছে রাজস্ব দফতর। শিল্পোন্নয়ন দফতর জানতে চেয়েছে, ১,১৭২টি পণ্যের আমদানি বন্ধ করা কতটা সম্ভব। তার মধ্যে রয়েছে এয়ার-কন্ডিশনার, কফি মেকারের মতো ভোগ্যপণ্যও।

ই-কমার্স সংস্থার পোর্টালে বিক্রি হওয়া প্রতিটি পণ্য কোথায় তৈরি, তার উল্লেখ চেয়ে গয়ালকে চিঠি দিয়েছে খুচরো ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি। নিশানা অবশ্যই পড়শি মুলুকের পণ্য। সেই সূত্রে সকলে ভারতীয় পণ্য কিনুন বলে চাইছে স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। সেই কারণেই প্রশ্ন থাকছে, দাম আর গুণমানে বাণিজ্যের লড়াই জেতার পরামর্শ মোদী সরকার কানে তুলবে তো?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement