রাঁচিতে রেল অবরোধে কৃষক সংগঠন সমযুক্ত কিসান মোর্চা। ছবি: পিটিআই
রাজপথ যা পারেনি, রেলপথে তা সম্ভব হবে, আশায় কৃষক আন্দোলনকারীরা। কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে দেশজুড়ে ‘রেলরোকো’ কর্মসূচি শুরু করলেন তাঁরা। দেশের ছয় রাজ্যে তাঁদের এই কর্মসূচির জেরে ব্যাহত হয়েছে রেল পরিষেবা। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকের মূল শহরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ রাখতে হয়েছে রেল পরিষেবা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রেল পথ বরাবর অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন কৃষকরা। তাঁদের ঠেকাতে রেল পুলিশ মোতায়েন করার পাশাপাশি অতিরিক্ত সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে ছয় রাজ্যেই বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
দেশজুড়ে এই রেল অবরোধের কর্মসূচির কথা অবশ্য গত সপ্তাহেই জানিয়েছিল কৃষকদের সংগঠন ‘দ্য সমযুক্ত কিসান মোর্চা’। কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা বার বার ব্যর্থ হওয়ার পরই কৃষকদের আন্দোলনকে এই ভাবে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কখা ভেবেছে তারা। সেই ঘোষণার পর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরেই আন্দোলনকারীরা দফায় দফায় রওনা হন বিভিন্ন রাজ্যের উদ্দেশে। সোমবার সেই পরিকল্পনা মাথায় রেখেই দেশের ছয় রাজ্যে শুরু হয় কৃষকদের রেল অবরোধ।
গাজিয়াবাদ ও দিল্লির সীমান্তে সড়কপথে গত নভেম্বর থেকেই কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে প্রবল শীতে অবস্থান আন্দোলন করছেন কৃষকরা। কড়া নিরাপত্তার বেড়া দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের। সেই বেড়া টপকে তাঁরা যেমন রাজধানীতে ঢুকতে পারছেন না তেমনই তাঁদের সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হচ্ছে না রাজনীতিকদের।
রাজপথে নেমে গত তিন মাস ধরে চলা ওই আন্দোলনে এখনও সুফল মেলেনি। কেন্দ্র নতুন তিনটি কৃষি আইন শুধুমাত্র ১৮ মাস স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু, এমন অস্থায়ী ব্যবস্থায় ভুলতে নারাজ কৃষক আন্দোলনকারীরা। তাই কেন্দ্রের উপর চাপ আরও বাড়াতে এবার দেশজুড়ে কৃষি আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তাবায়িত করছেন তাঁরা।
কৃষকদের অভিযোগ, কেন্দ্রের নতুন তিনটি কৃষি আইন তাঁদের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের অধিকার কেড়ে নেবে। এর পাশাপাশি নতুন কৃষি আইনে মাণ্ডি ব্যবস্থা ও ফড়েরা না থাকলেও তাঁদের আশঙ্কা, বড় সংস্থাগুলিকে তখন কম দামেও বিক্রি করতে হতে পারে তাঁদের ফসল।