(বাঁ দিকে) শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়কর। পূজার মা মনোরমা খেড়কর (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়করের মা মনোরমা খেড়করকে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্রের পুলিশ। রায়গড় জেলার একটি হোটেলে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন গাড়ির চালকও। পুলিশ সূত্রে খবর, মনোরমা ভুয়ো পরিচয় দিয়ে নাম বদলে ওই হোটেলে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর চেষ্টা সফল হয়নি।
একটি পুরনো ভাইরাল ভিডিয়োর সূত্রে মনোরমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে তাঁকে এক কৃষককে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। মনোরমার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ওই কৃষক। তার পর থেকেই মনোরমা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে পুণে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রয়েছে। পুণের আদালত তাঁকে আপাতত দু’দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জাল আধার কার্ড দেখিয়ে হোটেলে ঢুকেছিলেন মনোরমা। ব্যক্তিগত ভাবে একটি গাড়ি ভাড়া করে সেখানে গিয়েছিলেন। গাড়ির চালককে নিয়েই হোটেলে যান তিনি। হোটেলে তাঁকে নিজের পুত্র বলে পরিচয় দেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেলে ‘ইন্দুবাই’ নামে থাকছিলেন তিনি।
মনোরমার ফোনের লোকশনের সূত্রে তাঁর কাছ অবধি পৌঁছেছে পুলিশ। ওই হোটেলের বাইরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। যে ভিডিয়োর ভিত্তিতে মনোরমার বিরুদ্ধে মামলা, সেটি ২০২৩ সালের। দু’মিনিটের সেই ভিডিয়োয় মনোরমাকে দেখা যাচ্ছে পিস্তল উঁচিয়ে এক কৃষকের সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলতে। মনোরমার পাশে দাঁড়িয়ে একজন ‘বাউন্সার’। মনোরমা ওই কৃষকের সঙ্গে তর্কাতর্কি করছেন কোনও একটি জমির মালিকানা নিয়ে। ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে পুলিশ সেটির সত্যতা যাচাই করে জানতে পেরেছে, যে জমি নিয়ে তর্ক চলছিল, সেটি কিনেছিলেন পূজার বাবা এবং প্রাক্তন আমলা দিলীপ খেড়কর। মহারাষ্ট্রেরই মুলসি তহসিলে ২৫ একর জমি কিনেছিলেন দিলীপ। সেই জমিতে পূজার মায়ের ‘দিদিগিরি’র ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই মনোরমা এবং দিলীপের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাঁদের খুঁজে বার করার জন্য তিনটি পুলিশের দল তৈরি করা হয়। দিলীপের খোঁজ এখনও চলছে।
বিতর্কের সূত্রপাত মনোরমার কন্যা পূজাকে নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ফয়দা তোলা, আমলা হওয়ার পরীক্ষায় জাল শংসাপত্র দাখিল এবং ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগে ইতিমধ্যেই পূজার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শিক্ষানবিশ আমলার কাজ স্থগিত রেখে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে আমলা প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠানে। তাঁর বাড়িতে চালানো হয়েছে বুলডোজ়ারও।