পূজা খেড়কর। ফাইল চিত্র।
একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে আরও চাপে শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়কর। ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। তার পর ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে সংরক্ষণ, জাল ঠিকানা, ভুয়ো রেশন কার্ড ব্যবহার করে সংরক্ষণের শংসাপত্র তৈরি করা, এমনকি সেই শংসাপত্র ব্যবহার করে ইউপিএসসি পরীক্ষায় সুযোগ নেওয়ার মতো একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। তাঁকে ঘিরে একের পর এক বিতর্কের মধ্যেই এ বার পূজাকে অন্য একটি মামলায় তলব করল পুণে পুলিশ।
পুণের জেলাশাসক সুহাস দিওয়াসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন পূজা। গত ১৫ জুলাই ওয়াশিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে পুণে পুলিশের কাছে সেই মামলাটি তুলে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, জেলাশাসক সুহাসের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের তদন্ত করবে অপরাধদমন শাখা। জেলাশাসকের বয়ানও খুব শীঘ্রই রেকর্ড করা হবে। তদন্তের পরই স্থির করা হবে, জেলাশাসকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে কি না। সোমবার রাতেই ওয়াশিমে নিজের বাড়িতে পুলিশকে ডেকেছিলেন পূজা। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় দু’ঘণ্টা পর পূজার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিন মহিলা পুলিশ আধিকারিক। পরে জানা যায়, জেলাশাসকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন পূজা। এ বার সেই মামলাতেই পূজাকে তলব করল পুণে পুলিশ।
ঘটনাচক্রে, পুণের জেলাশাসকই পূজার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ আনেন। গত ২৪ জুন এক চিঠিতে জেলাশাসক জানিয়েছেন, এক জন শিক্ষানবিশ আমলা হয়ে যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, সেই সব সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করেছেন পূজা। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত আমলা দিলীপ খেড়করও তাঁর কন্যার দাবি পূরণের জন্য জেলা প্রশাসনের কর্মীদের ‘চাপ’ দিয়েছেন।
পূজার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঊর্ধ্বতন কর্তার প্রতিনিধিকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার ঘর, চেম্বার, গাড়ি যেন কাজে যোগ দেওয়ার আগেই প্রস্তুত থাকে। কাজে যোগ দেওয়ার পরে আর এ নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না।’’ এক জন শিক্ষানবিশ আমলা হয়ে কী ভাবে ব্যক্তিগত গাড়িতে মহারাষ্ট্র সরকারের স্টিকার এবং লালবাতি লাগিয়ে ঘোরাফেরা করছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। আর এই ঘটনা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। তার পর থেকে পূজার একের পর এক ‘কীর্তি’ প্রকাশ্যে এসেছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গে আরও বিতর্কের জালে জড়িয়েছেন এই শিক্ষানবিশ আমলা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত এক সদস্যের একটি কমিটি। সম্প্রতি পূজাকে উত্তরাখণ্ডের মুসৌরির আইএএস অ্যাকাডেমি থেকেও তলব করা হয়। পাশাপাশি, তাঁর প্রশিক্ষণও স্থগিত রাখা হচ্ছে বলে নোটিস দিয়ে জানানো হয়।