ডেরেক ও ব্রায়েন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আগামী ১৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। সেই অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের উপর আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার কলকাতায় তৃণমূল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়।
বৈঠকে হাজির ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। বৈঠক প্রসঙ্গে ডেরেক বলেন, ‘‘সংসদে দলের রণকৌশল সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। দলনেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা অনুসরণ করেই দলের সাংসদেরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন।’’ সূত্রের খবর, বৈঠকে স্থির হয়েছে, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণের নিশানা করবে বাংলার শাসক দল।
প্রথমত, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) এবং ভারতীয় জীবনবিমা নিগম (এলআইসি) নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত নীতি নিচ্ছে তা জনস্বার্থের বিরোধী। তাই লোকসভা ও রাজ্যসভায় এ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো বক্তৃতা করবেন তৃণমূল সাংসদরা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একটি নির্দিষ্ট শিল্পসংস্থায় দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এসবিআই এবং জীবনবিমা সংস্থা এলআইসির বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যায় জেরে ‘ব্যাখ্যা’ দিতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট দু’টি সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে।
দ্বিতীয়ত, ফেব্রুয়ারি মাসের উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৩ রাজ্য ত্রিপুরা মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে ভোট হয়েছে। সেই ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পরেই রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত যে সাধারণ মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী, তা-ও সংসদে তুলে ধরবেন তৃণমূল সাংসদরা। দলের এক সাংসদ বলেন, ‘‘কী ভাবে সরকার ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরেই রান্নার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেশের নিম্নমধ্যবিত্ত, গরিব জনতার উপর মূল্যবৃদ্ধির খাঁড়া নামিয়ে এনেছে, সেই বিষয়গুলি সংসদের ভিতরে ও বাইরে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার যে একের পর এক পদক্ষেপ করে যাচ্ছে সেই বিষয়েও সরব হবেন তাঁরা।
এ ছাড়া, ১০০ দিনের কাজ-সহ রাজ্যে সরকারের বহু পাওনা যে কেন্দ্রীয় সরকার নানা অছিলায় আটকে রেখেছে, তাও সংসদে তুলে ধরবেন তৃণমূল সাংসদরা। পাশাপাশি, মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে মোদী সরকারের যে কোন মাথাব্যথা নেই তা-ও তুলে ধরবেন তৃণমূল সাংসদরা। মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১০ সালের বিলটি রাজ্যসভায় পাস হলেও, এখনও বিষয়টি নিয়ে উদাসীন রয়েছে কেন্দ্র। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে লোকসভা ও বিধানসভায় ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন মহিলা রাজনীতিকরা।