নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে চেয়ারে বসিয়ে দিচ্ছেন সদ্যপ্রাক্তন বিপ্লবকুমার দেব। সোমবার আগরতলার মহাকরণে। নিজস্ব চিত্র
ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর পালাবদলের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে নিজেদের প্রচার কৌশল করে নতুন করে সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, বিপ্লব দেবের ইস্তফার বিষয়টিকে হেলায় হারাতে না দিয়ে, রাজনৈতিক ভাবে তা কাজে লাগাতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। গত কালই ত্রিপুরায় পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব। আগামী এক সপ্তাহ সেখানকার তৃণমূল স্তরে সাংগঠনিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে একটি নির্দিষ্ট কৌশল তৈরি করার কথা রয়েছে তাঁর।
কী হতে পারে সেই কৌশল? তৃণমূল মনে করছে, যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব গোড়া থেকেই ত্রিপুরা বিজেপির মধ্যে ছিল, তা বিপ্লবের ইস্তফার পরে আরও বাড়বে। সেই বিষয়টিকে চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি এ কথাই বলা হবে, মুখ্যমন্ত্রী বদল করে বিজেপি নেতৃত্ব নিজেরাই স্বীকার করে নিল, বিপ্লব দেব সরকার সম্পর্কে এতদিন তৃণমূল যে সমালোচনাগুলি করে আসছিল, তা সত্য।
তৃণমূলের বক্তব্য, রা্জ্যের একাদশতম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মানিক সাহার শপথ অনুষ্ঠানেই বিজেপির ভবিষ্যৎ কোন্দল স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিপ্লব দেবের মন্ত্রিসভার অনেকেই ওই অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন। অন্য দিকে বিপ্লবের ইস্তফা নিয়ে যখন দলের ভিতরে-বাইরে চর্চা, তখন সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী নীতি দেব একটি টুইট করে চাঞ্চল্য এবং কৌতুকের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর আশা, ঈশ্বরের অলৌকিক ছোঁয়ায় ফের সুদিন ফিরবে বিপ্লবের। ইংরেজিতে একটি টুইট করে তিনি বলেন, ‘যখনই আপনি মনে করেন সব শেষ, ঈশ্বর আপনাকে একটি মীরাক্কেল পাঠান। ত্রিপুরাসুন্দরীজির আশীর্বাদ যেন সবার উপরে বর্ষিত হয়।’ টুইটের সঙ্গে দু’জনের দেবীদর্শনের ছবিও দিয়েছেন তিনি। কৌতুকের কারণ ইংরাজি শব্দ ‘মিরাকল’-এর অর্থ অলৌকিক। কিন্তু তিনি তা না লিখে, যে বানান তিনি লিখেছেন, তার উচ্চারণ হয় ‘মীরাক্কেল’। যা একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানের নাম। তবে তৃণমূলের বক্তব্য, কৌতুকের পর্বটি সরিয়ে রাখলেও এটা স্পষ্ট যে, দিল্লির নির্দেশে সরতে হলেও আবার ফেরার স্বপ্ন দেখছেন বিপ্লব। ফলে বাড়বে দলের মধ্যে সংঘাত।
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “আমরা আড়াই-তিন মাস মাঠে দাঁড়িয়ে বিপ্লব দেব সরকারের দুর্নীতি এবং মানুষের উপর নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছি। পুরভোটে আমাদের ভোট গড়ে ২০ শতাংশ তো থেকেছেই, অনেক কেন্দ্রে ২৬ শতাংশ ভোটও তৃণমূল পেয়েছে। আজ এ কথা বলাই চলে যে সিপিএম নয়, আমরা এই সরকারের উপরে চাপ তৈরি করে মুখোশ না খুলে দিলে, বিজেপির দিল্লির নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসতেন না। মুখ্যমন্ত্রীও বদল করতে হত না।”