ছবি: সংগৃহীত।
বিজেপি বড় শত্রু না তৃণমূল কংগ্রেস, তা নিয়ে বাম শিবিরে বিতর্কের সুর চড়ল। বাংলায় বিজেপিই বামেদের পয়লা শত্রু হওয়া উচিত বলে লিবারেশনের তত্ত্ব সিপিএম নেতারা নাকচ করে দেওয়ায় আজ লিবারেশন সিপিএমকেই পাল্টা আক্রমণ করল। লিবারেশনের পলিটবুরো সদস্য কবিতা কৃষ্ণনের কথায়, বাংলায় সিপিএম নেতারা বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে এক করে দেখানোর যে তত্ত্বের কথা বলছেন, তাতে বিজেপিরই লাভ হবে। আগে তৃণমূলকে সরানো, তার পরে বিজেপিকে বুঝে নেওয়ার ধারণাও ভ্রান্ত।
বিহারে ভোটে বাম দলগুলির মধ্যে সব চেয়ে ভাল ফল করার পরে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন নেতৃত্ব যুক্তি দিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপিই বামেদের ‘প্রধান শত্রু’ হওয়া উচিত। কিন্তু সিপিএম সেই তত্ত্ব খারিজ করে বলেছিল, তৃণমূলকে না-হারিয়ে বিজেপিকে হারানো যাবে না। এ বার সিপিএমের ‘অগ্রাধিকার ও তুল্যমূল্য বিচার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কবিতার মন্তব্য, বাংলায় সিপিএম নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লম্বা বক্তৃতা করেন। পাদটীকায় বিজেপি জায়গা পায়। হওয়া উচিত উল্টোটা। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটাই বামেদের প্রধান কাজ।
বিহারের ভোটের পরে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছেন— তৃণমূলের বিরোধিতা করলেও, বিজেপিকেই মূল নিশানা করতে হবে। কিন্তু বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলে দেন, তৃণমূলের প্রতি নরম হওয়ার প্রশ্ন নেই। ইয়েচুরি বলেছিলেন, সেটা হলে বিজেপি একাই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষের ফায়দা তুলবে। তাতে বিজেপিকে হারানো যাবে না। বাংলায় লিবারেশনও একই তত্ত্বে বিশ্বাসী বলেও সিপিএম নেতারা জানিয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁদের মতপার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়ে আজ কবিতা বলেছেন, “আমরা বিজেপিকেই পয়লা শত্রু চিহ্নিত করছি। বাংলায় বিজেপির বাড়বাড়ন্তকে অস্বীকার করলে তা চূড়ান্ত বোকামি হবে। বিজেপি সুপ্ত মুসলিমভীতিতে হাওয়া দিচ্ছে। সিপিএম সেটা স্বীকারই করছে না, মানুষকে সতর্ক করা বা তার বিরুদ্ধে লড়াই তো দূরের কথা। সিপিএম মোদী ও মমতার মধ্যে মিথ্যে সাযুজ্য টানে। ওঁদের ‘মোদী ভাই দিদি ভাই’-এর স্লোগানের কি কোনও প্রভাব পড়ে?” কবিতার যুক্তি, সিপিএম নেতারা তাঁদের প্রতি মানুষের অসন্তোষ মানতে চান না। ভাবেন, কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হওয়ায় তাঁরা হেরেছিলেন। সিপিএমের উচিত আগে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ভুল স্বীকার করা।