রাহুল গাঁধীর প্রাতরাশ বৈঠক। ছবি: পিটিআই।
গত সপ্তাহের গোড়ায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর ডাকা বিরোধী দলের বৈঠকে যোগ দেয়নি তৃণমূল। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন দিল্লিতে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মমতা ও সনিয়া গাঁধীর বৈঠক স্থির হয়ে আছে। সেখানেই কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ঠিক হবে।
আজ রাহুল গাঁধীর ডাকা প্রাতরাশ বৈঠকে তৃণমূলের জনা দশেক সাংসদ উপস্থিত থাকলেন ঠিকই। কিন্তু লোকসভার শীর্ষ স্তরের প্রতিনিধিত্ব থাকলেও সেখানে রাজ্যসভার সংসদীয় দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। দলের এক প্রবীণ সাংসদের মন্তব্য, ‘‘রাহুলের বৈঠক বয়কট করা হল না। কিন্তু সেইসঙ্গে তাঁকে বিরাট গুরুত্বও দেওয়া হল না। এটাই ছিল কৌশল।’’ রাহুলের প্রাতরাশ বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের সংসদীয় দলের মধ্যেও টানাপড়েন ছিল। একটি অংশের বক্তব্য ছিল, রাহুল গাঁধী নিছকই একজন সাংসদ, দলের নেতা নন। তিনি সমস্ত বিরোধী দলকে ডেকে নিজস্ব প্রচার ও প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। সেটা তাঁর দলের জন্য ঠিকই আছে। কিন্তু তৃণমূলের সাংসদেরা তাতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন কেন? যদি বিজেপি বিরোধিতার মঞ্চ তৈরি করতেই হয়, তা হলে সব বিরোধী দলের নেতারা বৈঠকে বসুন। আবার অন্য অংশের বক্তব্য, সংসদ চলাকালীন প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজের বৈঠক চলতেই থাকে। এতে সমস্যার কিছু নেই। বরং এর ফলে বিরোধী ঐক্য মজবুত হবে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, গতকাল রাতে ঠিক হয়েছিল, রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় এবং লোকসভায় দলের মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থতার কারণে যেতে পারবেন না, আগেই স্থির ছিল) প্রাতরাশ বৈঠকে অবশ্যই যাবেন। সঙ্গে অন্য অনেকেই যাবেন। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নূর অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি রাহুলের বৈঠকে যেতে পারবেন না। আজ সকালে দেখা যায়, তৃণমূলের লোকসভার পক্ষ থেকে যথাযথ প্রতিনিধিত্ব থাকলেও রাজ্যসভার ক্ষেত্রে তা নেই। রাহুলের বৈঠকে যাননি ডেরেক ও সুখেন্দুশেখর রায়। গতকালই সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়েছিলেন, তিনি ‘বাইরের খাবার’ খান না! কিন্তু ডেরেকের যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত কেন তা বাতিল হল, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে আজ আলোচনা চলেছে। সূত্রের খবর, রাহুলের বৈঠকে চিদম্বরম তৃণমূলের এক সাংসদকে প্রশ্ন করেন, ডেরেক আসেননি কেন।
তবে দিনের শেষে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব রাহুলের প্রাতরাশ বৈঠকটিকে বিরাট গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বলেই খবর।