(বাঁ দিক থেকে) জগদীপ ধনখড়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তালিকায় তাঁর নাম ছিল। কিন্তু বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ রেখেই গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। বুধবার রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে মমতা-সহ তৃণমূলের ১১ জন সাংসদ দেখা করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু সেই দলে ছিলেন না কল্যাণ। অনেকের বক্তব্য ছিল, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে নকল করে কল্যাণ যে বিতর্কে জড়িয়েছেন, সেই কারণেই তাঁকে বাদ রেখে মোদীর কাছে গিয়েছিলেন মমতা। যদিও মোদীর সঙ্গে দেখা করে বার হওয়ার পর মমতা বলেন, ‘‘কোনও অসম্মানের বিষয় নয়। কল্যাণ যা করেছেন সেটা হালকা চালে’’ তবে সেই কারণেই তাঁকে প্রতিনিধি দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কি না তা স্পষ্ট করেননি মমতা। কল্যাণের বদলে প্রতিনিধিদলে যুক্ত হন রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ নাদিমুল হক।
যদিও প্রথমে কল্যাণ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মমতা। তিনি বলেন, লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ লোকসভার সাংসদেরা এ বিষয়ে যা বলার বলবেন। যদিও পরে ফের তাঁকে প্রশ্ন করায় তিনি ওই মন্তব্য করেন। প্রসঙ্গত, দলনেত্রী হিসেবে প্রকাশ্যে কল্যাণের সমালোচনা করা মমতার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এ-ও ঠিক, কল্যাণের ওই কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূলের কোনও নেতাই তাঁকে ‘বাহবা’ দেননি।
সোমবার সংসদের দুই কক্ষেই বিরোধী সাংসদেরা গণহারে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। মঙ্গলবারও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। এর মধ্যেই নতুন সংসদ ভবনের মকরদ্বারের সামনে বিরোধী সাংসদদের অবস্থানে কার্যত আসর জমিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। কল্যাণ যে ভঙ্গিতে কথা বলেন, শরীরী ভাষার প্রয়োগ ঘটান, তা দেখে অনেকেই দাবি করেন, তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কথা বলার ধরন, শরীরী ভাষা নকল করেছেন। কল্যাণের সেই ‘প্রতিভা’ দেখে কার্যত হেসে লুটোপুটি খেতে থাকেন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। দেখা যায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও পকেট থেকে মোবাইল ফোন বার করে কল্যাণের ভিডিয়ো তুলছেন।
তার পর গত ২৪ ঘণ্টায় সেই বিতর্ক আরও জমাট হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ধনখড়কে ফোন করে সমবেদনা জানিয়েছেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে রাষ্ট্রপতি লেখেন, ‘‘সংসদ চত্বরে আমাদের শ্রদ্ধেয় উপরাষ্ট্রপতিকে যে ভাবে অপমান করা হয়েছে, তা দেখে আমি হতাশ হয়েছি।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অবশ্যই নিজেদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। তবে তাঁদের অভিব্যক্তি মর্যাদা এবং সৌজন্যের নিয়মের মধ্যে হওয়া উচিত। যে সংসদীয় ঐতিহ্যের জন্য আমরা গর্বিত এবং যা ভারতের জনগণ আশা করে, সেটি বজায় থাকা উচিত।’’