মোদীর বিতর্কিত তথ্যচিত্র নিষিদ্ধের কারণ জানাল না কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর ‘ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন’ (বিবিসি)-এর তৈরি তথ্যচিত্র, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিষিদ্ধ করার কারণ জানতে তথ্যের অধিকার আইন (আরটিআই)-এর সাহায্য নিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে। বিধি মেনেই আবেদন জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু জবাব পেয়ে বিস্মিত হলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক কার্যত এড়িয়ে গিয়েছে আরটিআই-এ আনা সাকেতের প্রশ্ন। জবাবে জানিয়েছে, ২০২১ সালের সংশোধিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ১৬(১) নম্বর ধারায় বিবিসির তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট আন্তর্বিভাগীয় কমিটি। সেই সিদ্ধান্তের কারণ প্রকাশ্যে আনতে কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্য নয় বলেও জানানো হয়েছে আরটিআই-প্রশ্নের জবাবে। ২০০৫ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৮(১) ধারা মেনেই এই ‘গোপনীয়তা’ বলে কেন্দ্রের যুক্তি।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের জবাবি চিঠি টুইটার হ্যান্ডলে প্রকাশ করে সাকেত লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে বিবিসি ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করার নেপথ্যের কারণগুলি আমাকে জানানো হয়নি। কারণ এটি ‘ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে প্রভাবিত করবে’! প্রধানমন্ত্রী মোদীর সমালোচনা করে তৈরি একটি তথ্যচিত্র কী ভাবে ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে?’’ সাকেতের দাবি, বেআইনি ভাবে তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেই কারণ জানাতে পারেনি কেন্দ্র।
দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে বিবিসির ১ ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে। ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি। যদিও বিবিসি দাবি করে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি হয়েছে। জানুয়ারির শেষে কেন্দ্রের তরফে ইউটিউব এবং টুইটারকে বিবিসি-র তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সমাজমাধ্যম থেকে তুলে নিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, ‘আইটি রুলস ২০২১’-এর ‘জরুরি ক্ষমতা’ প্রয়োগ করেই হয়েছিল ওই পদক্ষেপ।