স্ট্রেচারে ঘুমন্ত বাঘিনি। অসমের বান্দরডুবি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
কান্ধুলিমারির ঠাকুমা সকালে ছাগলের ঘরে ঢুকে বস্তা ভেবে বাঘের পিঠে হাত বুলিয়েছিলেন।
আর বান্দরডুবির বৌদি রান্না চাপাতে গিয়ে দেখেন রান্নাঘরে বসে রয়্যাল বাঘিনি!
বানভাসি কাজিরাঙা থেকে সোমবার বেরিয়ে আসা তিনটে বাঘ তিন দিন ধরে নাজেহাল করল বন বিভাগকে।
অগরাতলি রেঞ্জের কান্ধুলিমারির রয়্যাল বেঙ্গল রাতটুকু ছাগলের ঘরের আতিথ্যে কাটিয়ে গত কাল সকালে নিজেই চলে গিয়েছে। পিঠে হাত বুলিয়ে দেওয়া ঠাকুমাকে কিছুটি করেনি সে। ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে আশ্রয় নেওয়া মারমুখী রয়্যাল বেঙ্গলকে নিয়ে ভয় ছিল। বন্ধ রাখতে হয় জাতীয় সড়কে যান চলাচল। অবশ্য আজ সকালে সে-ও কার্বি পাহাড়ে পাড়ি দেয়।
কিন্তু জলে ভাসতে ভাসতে বাগরি রেঞ্জ লাগোয়া বান্দরডুবি গ্রামের একটি বাড়িতে রান্নাঘরে ঢুকে বসে থাকা বাঘিনিকে নিয়ে সমস্যা ছিল। বন দফতরের অভিযান চলল ২৪ ঘণ্টা! অভিযানের নেতৃত্বে থাকা পশু চিকিৎসক সামসুল আলি জানান, গত কাল বাড়ির গোটা পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের মানুষকেও আটকে রাখা হয়েছিল। ভাবা হয়েছিল, আজ সকাল হলে বাঘিনি নিজেই চলে যাবে। কিন্তু বেরোনোর লক্ষণই ছিল না তার। বাধ্য হয়েই ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার সিদ্ধান্ত হয়। সামসুলই গুলি ছোড়েন। তার পর বছর দুই বয়সি ওই বাঘিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় পশু উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। সামসুল জানান, বাঘিনির ঘুম ভেঙেছে। এখন সে বিপন্মুক্ত।
কাজিরাঙায় এখন ১৫৩টি বনশিবির জলমগ্ন। মৃত প্রাণীর সংখ্যা ৬৬টি। অসমে ২৬টি জেলায় বন্যাক্রান্ত ৩৬ লক্ষ মানুষ। ৬২৯ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ।
গুয়াহাটিতে ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমা ছাড়িয়ে বইছে। জল ঢুকেছে উজানবাজার, কেদার রোড, ভূতনাথ শ্মশান, কুমারপাড়া, শান্তিপুর-সহ বিভিন্ন স্থানে। গুয়াহাটি ব্রহ্মপুত্রের জলতল বেড়ে ৫১.২৩ মিটার হয়েছে, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।