আবার অশান্ত মণিপুর। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরে অশান্তি যেন থামতেই চাইছে না। মঙ্গলবার সকালে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাংপোপকি জেলা। জঙ্গিরা ওই জেলায় ঢুকে কুকি-জো সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালায়। তাদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ওই সম্প্রদায়ের তিন জনের।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের এক দল সশস্ত্র সদস্য পশ্চিম ইম্ফল এবং কাংপোপকি জেলার সীমানালাগোয়া গ্রাম ইরেং এবং কারামে হামলা চালায়। এই গ্রামগুলি আদিবাসী অধ্যুষিত। আচমকা জঙ্গিরা হামলা চালানোয় পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ পাননি গ্রামবাসীরা। জঙ্গিদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন আদিবাসীর।
কাংপোপকির পুলিশ সুপার মনোজ প্রভাকর এম এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাংচুপ এলাকায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। এই কাংচুপ এলাকায় মূলত কুকিরা থাকে। ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম-এর মুখপাত্র গিঞ্জা ভালুজোংয়ের অভিযোগ, মেইতেই জঙ্গিরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত। এর পরই ট্রাইবাল লিডার্স ফোরাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যে ভাবে ঠান্ডা মাথায় কুকিদের হত্যা করেছে মেইতেই জঙ্গিরা তার প্রত্যুত্তর দেওয়া হবে।
সপ্তাহখানেক আগেই মেইতেই সংগঠনের মিছিল ঘিরে রাজ্যের পাঁচ জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কার্ফ উপেক্ষা করে, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করে মেইতেইদের নাগরিক অধিকার সংগঠন কোকোমির সসদস্যরা। মিছিল আটকাতে এবং বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে রবার বুলেট ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। সেই ঘটনায় বেশ কয়েক জন জখম হন।
গত শনিবার আবার উত্তপ্ত হয় রাজ্যের টেঙ্গনউপল জেলার পাল্লেল গ্রাম। নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। পাল্টা গুলি চালায় নিরাপত্তবাহিনীও। দফায় দফায় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জনতার গুলির লড়াই চলে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়, ওই দিন সকালে হাজারেরও বেশি মানুষ অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। মিছিল করে একটি জনজাতি গোষ্ঠীর গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে মেইতেই গোষ্ঠীর লোকেরা। সেই সময় তাঁদের আটকায় নিরাপত্তাবাহিনী। অভিযোগ, সেই বাধা পেয়েই নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। নিরাপত্তাবাহিনীর পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় তিন জনের।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।