দিল্লিতে এ বার দীপাবলিতে পোড়ানো যাবে না কোনও বাজি। ছবি: পিটিআই।
প্রতি বছর শীতের মরসুমে দূষণে দমবন্ধকর পরিস্থিতি হয়ে ওঠে দিল্লিতে। এই পরিস্থিতির সূচনা হয় দীপাবলীতে। রাজধানী জুড়ে আতশবাজির তাণ্ডব এক মুহূর্তে বাতাসের পরিস্থিতি একেবারে বদলে দেয়। প্রতি বছর তাই দিল্লির দূষণ নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা বিস্তর হয়। আতশবাজি তো আছেই, তার সঙ্গে শীতের মরসুমে ধানগাছের গোড়া পোড়ানোও অন্যতম একটা বড় সমস্যা। আর এই কাজ নিয়েই হরিয়ানা এবং দিল্লি পরস্পরের বিরুদ্ধে আঙুল তোলাও যেন একটা ‘স্বাভাবিক’ নিয়মে দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
দীপাবলিতে দিল্লি যাতে ‘গ্যাস চেম্বারে’ পরিণত না হয়, তাই আগেভাগেই কড়া পদক্ষেপ করল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সরকার। পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই সোমবার ঘোষণা করেন, এ বার দীপাবলিতে কোনও বাজি পোড়ানো যাবে না। এমনকি ‘গ্রিন ক্র্যাকারও’। দূষণ ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। দিল্লি পুলিশকে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে যাতে কাউকে বাজি বিক্রির লাইসেন্স না দেওয়া হয়, সে দিকটাও নজরদারি চালাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। শুধু তাই-ই নয়, বাসিন্দারা যাতে উৎসবের মরসুমে বাজি পোড়ানো থেকে বিরত থাকেন, সেই বিষয়েও সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চালাতে হবে।
মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, অনেক সময় প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে দিল্লিতে বাজি ঢোকে। সীমানা এলাকাগুলি দিয়ে যাতে বাজি দিল্লিতে না ঢুকতে পারে, সেই বিষয়টিও পুলিশকে সুনিশ্চিত করতে হবে। দূষণ কী ভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে বৈঠক ডেকেছেন পরিবেশ মন্ত্রী। ২৪ জন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সংগঠনগুলিকে এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। দিল্লি সরকার সূত্রে খবর, দীপাবলি এবং শীতের মরসুমগুলিতে কী ভাবে দূষণ ঠেকানো হবে, তা স্থির করতে অক্টোবরে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করবেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
মন্ত্রী গোপাল রাই বলেন, “দিল্লির বাতাসের মান উন্নত হয়েছে। কিন্তু শীতের মরসুম আসছে, ফলে দূষণ বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। অক্টোবর এবং নভেম্বরে রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই এই পরিস্থিতি ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী একটি অ্যাকশন প্ল্যান বানাচ্ছেন। ১ অক্টোবরা তা প্রকাশ্যে আনা হবে।” মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট ‘গ্রিন ক্র্যাকার’ ব্যবহারে ছাড় দিয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে, ‘গ্রিন ক্র্যাকার’-এর আড়ালে সমস্ত রকম বাজি বিক্রি হচ্ছে। ফলে দূষণ আরও বেড়েছে। তাই এ বার ‘গ্রিন ক্র্যাকার’-এও নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছেন তাঁরা।