প্রতীকী ছবি।
মধ্যপ্রদেশের বারওয়ানি জেলায় গত রবিবার রামনবমীতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে, তাঁদের মধ্যে ঘটনার আগে থেকেই জেলে বন্দি তিন জনের নামও রয়েছে! বিষয়টি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের তদন্ত নিয়েই। ইতিমধ্যেই অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ এনে ওই তিন জনের মধ্যে এক জনের বাড়িও ভেঙে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত তিন জনের নাম শাহবাজ, ফাকরু ও রউফ। ৫ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা হয়। তার পর থেকে তিন জনেই বিচারাধীন বন্দি। যে থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, সেখানেই রুজু হয়েছে সংঘর্ষে জড়িত থাকার মামলাটিও।
সংঘর্ষের ঘটনায় ওই তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ১০ এপ্রিল বারওয়ানি জেলার সেন্ধওয়াতে মোটরবাইকে আগুন দেওয়ার। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুলিশ আধিকারিক মনোহর সিংহ বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করব এবং জেল সুপারের কাছ থেকে তথ্য নেব। অভিযোগকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নথিভুক্ত হয়েছে।’’
শাহবাজের মা সকিনা অভিযোগ করেছেন, গোষ্ঠী সংঘর্ষের পরে কোনও নোটিস ছাড়াই তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ এসেছিল। আমাদের বার করে দিয়েছে। আমার ছেলে প্রায় দেড় মাস জেলে আছে। আমি জানতে চাই, কেন ওর বিরুদ্ধে এফআইআর হল? আমরা পুলিশকে বলেছিলাম, হাত জোড় করে মিনতি করেছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনতে রাজি নয়। ছোট ছেলেটাকেও ধরে নিয়ে গিয়েছে।’’
রামনবমীতে বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দিকে প্রথম থেকেই আঙুল তুলেছেন রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি-দোকানও বিচারের আগেই ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন ও পুলিশ। তখন থেকেই অভিযোগ উঠেছিল, একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিশানা করছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। জেলবন্দি তিন জনের নামে এফআইআর-এর ঘটনা সামনে আসায় সেই অভিযোগ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ সরকার সাম্প্রদায়িক বিভেদে ইন্ধন দিতে শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ধাঁচে বুলডোজ়ারকে ভোটের আগে শক্তি জাহির করার প্রতীক হিসাবে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করছেন তাঁরা।