প্রতীকী ছবি
‘‘জয় শ্রীরাম বলনে মে কেয়া হ্যায় (জয় শ্রীরাম বলতে ক্ষতি কী)’’
‘‘মেরি বাত শুনো (আমার কথা শুনুন)’’
‘‘জয় শ্রীরাম বোলনা পড়েগা। বল জয় শ্রীরাম (জয় শ্রীরাম বলতেই হবে। বল জয় শ্রীরাম)’’
‘‘চলো ঠিক হ্যায়। জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম। অব খুশ! (ঠিক আছে। জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম। এ বার খুশি!’’
উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো গোবলয়ের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির সেই চেনা ছবি ফের দেখা গেল শনিবার। এ বারের ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনীর সেকলি গ্রাম। আক্রান্ত এক প্রৌঢ়। তিনি পুরনো-ভাঙা জিনিসের কেনাবেচা করে দিন গুজরান করেন। তাতে কী! কয়েক দিন আগে এই মধ্যপ্রদেশেই মুসলিম হওয়ার ‘অপরাধে’ এক চুড়ি বিক্রেতাকে ঘিরে ধরে মারধর, চুড়ি ভেঙে, টাকাকড়ি কেড়ে নিয়েছিল একদল লোক। সেই ঘটনাকে পরোক্ষে সমর্থনও করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিস্তর হইচই হওয়ার পরে জনা কয়েক লোককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পাল্টা অবশ্য চুড়ি বিক্রেতার বিরুদ্ধে নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করতেও ছাড়েনি পুলিশ। তার ক’দিন পরে, মধ্যপ্রদেশেরই দেবসে আধার কার্ড না থাকায় এক মুসলিম বিস্কুট বিক্রেতাকে মারধর করেছিল একদল হিন্দুত্ববাদী।
শনিবারের ঘটনাটিতে আক্রমণকারী মাত্র দু’জন। কমল এবং ঈশ্বর। তাদের দাপটেই বিজেপি-শাসিত রাজ্যে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য হলেন প্রৌঢ়। ওই ব্যক্তির জিনিসপত্রও ছুড়ে ফেলে দুই আক্রমণকারী। এমনকি তিনি কী ভাবে গ্রামে ঢুকলেন, তা-ও জানতে চায় তারা। গোড়ায় তিনি আক্রমণকারীদের কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পাল্টা হুমকি আসে, রাম নাম না করলে ব্যবসাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। অগত্যা! পেটের দায়ে আক্রমণকারীদের কথা শুনে স্লোগান দেন তিনি। তার পরে রেহাই মেলে।
পরে আক্রান্ত ব্যক্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তত ক্ষণে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিকমাধ্যমে। চুড়ি বিক্রেতার উপরে হামলার ঘটনা নিয়ে এমনিতেই দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়ে ঈশ্বরকে আটক করেছে
পুলিশ। কড়া ব্যবস্থার আশ্বাসও দিয়েছেন পুলিশ-কর্তা। যদিও তাতে বিশেষ ভরসা পাচ্ছেন না কেউই। কারণ বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘুদের উপরে এমন অত্যাচারের ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে। বহু ক্ষেত্রেই পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে তাকছে অথবা আক্রান্তকেই নানা ভাবে হেনস্থা করছে। আর কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের গ্রেফতার
করা হলেও পুলিশ এমন ধারায় অভিযোগ আনছে যে তারা সহজেই জামিন পেয়ে যাচ্ছে।
এ যাত্রায় কী হয়, সেটাই দেখার।