স্ত্রীর উপর রাগ করে গত ৪২ বছর ধরে ভাত খাচ্ছেন না ওই ব্যক্তি। প্রতীকী ছবি।
কথিত আছে সীতাকে বনবাসে পাঠিয়েছিলেন রাম। অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল সীতাকে। আর এ যুগে সীতাকে ‘পরিত্যাগ’ করে ঘর ছেড়ে ৪২ বছর আলাদা দিনযাপন করছেন রাম। গত ৪২ বছর ধরে রাগ করে স্ত্রী সীতার রেঁধে দেওয়া খাবার মুখে তোলেননি এ কালের রামচন্দ্র। শুধু কি তাই, এত বছর ধরে ভাতও মুখে তোলেননি তিনি।
ওড়িশার জাজপুর জেলার রসুলপুর ব্লকের লক্ষ্মীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভিকিপুর গ্রামের বাসিন্দা রামচন্দ্র পেশায় দিনমজুর। যখন কাজ জোটে না, তখন শুকনো মাছ বিক্রি করে দু’বেলার অন্ন সংস্থান করেন তিনি। পাঁচ কন্যা ও দুই পুত্রসন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার ছিল ভরপুর।
কিন্তু সুখের সংসারে আচমকাই এক দিন চিড় ধরল। কাজে বেরোনোর সময় স্ত্রী সীতাকে খাবার রান্না করে রাখতে বলেছিলেন রাম। ঠিক করেছিলেন, কাজ সেরে বাড়ি ফিরে সেই খাবার খাবেন। কিন্তু সংসারের নানা কাজ সামলাতে গিয়ে স্বামীর জন্য সে দিন খাবার রান্না করতে পারেননি সীতা। বাড়ি ফিরে খাবার না পেয়ে কয়েক মুহূর্তেই রেগে যান রাম। তার পরই রাগের বশে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়।
ক্রোধের জেরে রাম সে দিন প্রতীক্ষা করে ফেলেন যে, সীতার হাতে তৈরি অন্ন আর কখনও মুখে তুলবেন না। এমনকি, নিজের বাড়ি ছেড়ে একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে সেখানে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। এ ভাবেই ৪২টা বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও নিজের প্রতিজ্ঞা ভাঙেননি রাম। সে দিনের পর থেকে আর ভাত খাচ্ছেন না রাম। সারা দিন মুড়ি খেয়েই ক্ষুধা মেটান তিনি। বন্ধু-স্বজনরা তাঁকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও সরেননি রাম।
রাম-সীতার ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে ছেলে-বৌমা, নাতি-নাতনিদের সঙ্গেই দিন কাটাচ্ছেন সীতা। তবে স্ত্রীর সঙ্গে মান-অভিমান চললেও দৈনিক কাজের পারিশ্রমিক নিয়মিত সীতাকে দিচ্ছেন রাম। সম্প্রতি এ কালের রাম-সীতার এ হেন উপাখ্যানের কথা প্রকাশ্যে এসেছে।