দিল্লির সেই সরকারি হোম। ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লির একটি সরকারি হোমে কেবল জুলাই মাসেই ১৩ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই হোম নিয়ে মহকুমা শাসকের তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজধানীতে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির আপ সরকারের মন্ত্রী অতিশী মারলেনা। শিশুমৃত্যু নিয়ে আপ এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
দিল্লির রোহিণী এলাকায় অবস্থিত হোমটির নাম ‘আশা কিরণ’। হোমে একের পর এক শিশুমৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে উঠে আসে, ২০ দিনে সেখানে ১৩ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছে ২৭ জন শিশু। অভিযোগ, হোমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হয় শিশুদের। রিপোর্টেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, শিশুদের খারাপ মানের পানীয় জল দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, দিল্লির সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনস্থ আশা কিরণ হোমে মূলত বিশেষ ভাবে সক্ষমদের রাখা হয়।
রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই দিল্লির আপ সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখতে হোমটিতে যায় কমিশনের একটি দল। দিল্লি সরকারকে আক্রমণ করে রেখা বলেন, “দিল্লি সরকার পরিচালিত হোম আশা কিরণে সব আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। মানুষ সেখানে মারা যাচ্ছে। অথচ দিল্লি সরকার কিছুই করছে না।” শুক্রবার হোম পরিদর্শনে যায় বিজেপির একটি প্রতিনিধিদলও। শিশুমৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরেই দিল্লির মন্ত্রী অতিশী অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
অতিশী এই প্রসঙ্গে বলেন, “দিল্লিতে এই ধরনের খবর শোনা খুবই বেদনাদায়ক। এই ধরনের গাফিলতি আমরা বরদাস্ত করব না। এটা খুবই গুরুতর বিষয় এবং এর সবিস্তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” তবে অতিশীর দাবি, জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ওই হোমে ১৪ জন শিশু মারা গিয়েছে। বিজেপির আক্রমণের জবাবে আপ নেতা তথা দিল্লির মন্ত্রী গোপাল রাই বলেন, “বিজেপি হোমে মৃত্যুর প্রতিবাদ করছে। কিন্তু নর্দমায় পড়ে গিয়ে বৃষ্টির জলে ভেসে যখন মা এবং শিশুপুত্রের মৃত্যু হল, তখন বিজেপি নেতাদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।” দিল্লি সরকার মানুষের পাশে রয়েছে বলে জানান তিনি।