মেট্রো রেলের নির্মাণস্থলে স্তম্ভ ধসে মৃ্ত্যু হয় ২৫ বছরের তরুণী তেজস্বিনী এবং তাঁর কোলের সন্তান বিহান। ছবি: সংগৃহীত।
শোকে মুহ্যমান দুই বাবা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সুবিচার না পেলে সন্তানের দেহ নেবেন না। মেট্রোর স্তম্ভের নীচে চাপা পড়ে মারা যান ২৫ বছরের তরুণী তেজস্বিনী এবং তাঁর কোলের শিশু বিহান। সোমবার বেঙ্গালুরুর সেই ঘটনায় তেজস্বিনীর বাবা এবং স্বামী দাবি করেছিলেন, অবিলম্বে মেট্রোর নির্মাণকাজের চুক্তি বাতিল করতে হবে সরকারকে। নির্মাণকাজ চালাচ্ছিল যে সংস্থা, তাদেরকেও শাস্তি দিতে হবে। তবেই সন্তানের দেহ সৎকার করবেন তাঁরা। অবশেষে সেই দাবির ২৪ ঘণ্টা পর বুধবার তেজস্বিনী এবং তাঁর শিশুপুত্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করল তাঁদের পরিবার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দোষী সন্দেহে ৭ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও, বেঙ্গালুরুর মেট্রোরেল কর্পোরেশন সাসপেন্ড করেছে ৩ জনকে। বুধবারই কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র এই ঘোষণা করেন। তিনি জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনই মেট্রোরেলের নির্মাণসংস্থা নাগার্জুন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি(এনসিসি)-র কর্মী। বাকি দু’জন বেঙ্গালুরু মেট্রোরেল কর্পোরেশনের কর্মী। অভিযুক্তদের পদাধিকার সংক্রান্ত তথ্যও জানান কর্নাটকের ওই মন্ত্রী। তিনি বলেন, নির্মাণ সংস্থা এনসিসির এক অধিকর্তা, সিনিয়র ম্যানেজার, ম্যানেজার এবং এক তত্ত্বাবধায়ক বা সুপারভাইসারের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। বেঙ্গালুরু মেট্রোর ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং এক সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধেও দায়ের হয়েছে এফআইআর। মন্ত্রীর দেওয়া ওই বিবৃতির পরই তেজস্বিনী এবং তাঁর সন্তানের দেহ নিয়ে সৎকার করে তাঁদের পরিবার।
এক সংবাদ সংস্থা অবশ্য জানিয়েছে, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী মেট্রোর নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য ইঞ্জনিয়ারের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এফআইআরে তাঁর নাম নেই। প্রসঙ্গত, আগেই তেজস্বিনী এবং তাঁর শিশুপুত্রের মৃত্যুর জন্য বেঙ্গালুরু মেট্রোর তরফে ২০ লক্ষ টাকা এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বম্মাইয়ের তরফে ১০ লক্ষ টাকার এককালীন অর্থসাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে।