POSCO

পকসো আইনে সম্মতির বয়স না কমাতে সুপারিশ

সব সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইন এক করার জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার কথা বিবেচনা করছে কেন্দ্র। পাশাপাশি সমলিঙ্গে বিয়ের স্বীকৃতি চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন কয়েক জন আবেদনকারী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পকসো আইনের অধীনে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স ১৮ থেকে ১৬ বছর করার বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে পরামর্শ দিল আইন কমিশন। কমিশনের মতে, এই পদক্ষেপ করলে নাবালক-নাবালিকাদের বিবাহ ও শিশু পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই ধাক্কা খাবে। তবে যে সব ক্ষেত্রে ১৬-১৮ বছর বয়সিদের যৌন সম্পর্কে সম্মতি রয়েছে সেই সব মামলার রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালতকে নিজস্ব বিবেচনা প্রয়োগ করতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের মতে, সে জন্য আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সমলিঙ্গে বিয়েকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতায় রাখার সুপারিশ করেছে কমিশন।

Advertisement

গত ডিসেম্বরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘পকসো আইনে ১৮ বছরের কম বয়সিদের সব যৌন সম্পর্কই নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নাবালক-নাবালিকাদের মধ্যে সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক হয়। বিচারপতি হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে এই ধরনের মামলাতেই বিচারক-বিচারপতিরা বেশি সমস্যায় পড়েন। নাবালক-নাবালিকাদের স্বাস্থ্য নিয়ে উপযুক্ত গবেষকদের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই বিষয়টি আইনসভার বিবেচনা করা উচিত।’’

বিষয়টি বিবেচনার পরে প্রাক্তন বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থির নেতৃত্বাধীন ২২তম আইন কমিশনের বক্তব্য, ‘‘আমরা নাবালক নির্যাতন রোধ আইন ও বিভিন্ন রায় খতিয়ে দেখেছি। সেই সঙ্গে আমাদের সমাজে শিশু নির্যাতন, শিশু পাচার ও শিশুদের যৌন ব্যবসায়ে নামানোর কথা খতিয়ে দেখেছি। আমাদের মত, পকসো আইনের অধীনে যৌন সম্পর্কে সম্মতির বয়স কমানো উচিত নয়।’’

Advertisement

কমিশনের মতে, যৌন সম্পর্কে নাবালক-নাবালিকার সম্মতি থাকলেই যদি তা অপরাধের আওতার বাইরে চলে যায় তবে মনে রাখতে হবে জোর করেও সম্মতি আদায় করা যায়। কমিশন জানিয়েছে, তথ্য অনুযায়ী শিশুদের নির্যাতনকারীরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের পরিচিত। এমনকি অনেক সময়ে তারা একই পরিবারের সদস্য। ফলে আইন লঘু করলে তা কেবল কাগুজে আইনে পরিণত হবে।

কমিশনের বক্তব্য, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশি তদন্তে অনেক অসঙ্গতি থাকে। যদি তদন্তকারীরা সম্মতি আছে কি না তা নির্ধারণ করতে যান তবে উপযুক্ত অনেক মামলারই পকসো আইনে বিচার হবে না। কারণ, তদন্তকারীরাই সেগুলিকে প্রেমের সম্পর্ক ও সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কের তকমা দেবেন।’’

তবে কমিশনের মতে, যে সব ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের সম্মতি রয়েছে সেগুলির সমাধান করার জন্য পকসো আইন সংশোধন করা উচিত। যে সব মামলার কথা ভেবে পকসো আইন চালু করা হয়েছিল সেগুলির মতো বিচার এগুলির ক্ষেত্রে হওয়া উচিত নয় বলে মনে করে কমিশন। সে জন্য আইনে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন। এ সব ক্ষেত্রে আদালতকে নিজস্ব বিবেচনা প্রয়োগ করতে দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে কমিশন।

সব সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইন এক করার জন্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার কথা বিবেচনা করছে কেন্দ্র। পাশাপাশি সমলিঙ্গে বিয়ের স্বীকৃতি চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন কয়েক জন আবেদনকারী। এই পরিস্থিতিতে কমিশনের সুপারিশ, সমলিঙ্গে বিয়েকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির আওতার বাইরে রাখা হোক।

আইন কমিশনের সুপারিশ মানতে বাধ্য নয় সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement