প্রতীকী ছবি
আগামী দু’মাসের মধ্যে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে কোভিড-টিকার প্রথম ডোজ় দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিছু কিছু রাজ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই কাজ শেষ করবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রকে। উৎসবের মরসুম শেষ হতেই অক্টোবরে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি ডোজ় কোভিড থেকে কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এ দিকে, গত কালের তুলনায় সংক্রমণ কিছুটা কমে আজ দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৯০৯। তবে কেরল ও মহারাষ্ট্র নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।
কেন্দ্রের সতর্কতা সত্ত্বেও গত ২৪ অগস্ট ওনাম উৎসব পালনের পর থেকেই সংক্রমণ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যায় কেরলে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ হাজার ৮৩৬ জন। দেশের মোট সংক্রমণের ৬৬ শতাংশ। সে রাজ্যের ২ কোটির বেশি মানুষ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় পেয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার।
এ দিকে, মহারাষ্ট্রে আজ জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান ঘিরে বিশেষ সতর্ক ছিল সরকার। বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল দহি-হান্ডির মতো অনুষ্ঠান। ১০ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে গণেশ পুজো। তার পরে দশেরা ও দীপাবলি। কোভিড বিধি ভেঙে জমায়েত-মিছিল আটকাতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি সমাজের প্রভাবশালীদের এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপ বলেছেন, ‘‘ওনামের পরে কেরলে কী ভাবে সংক্রমণ বেড়েছে তা আমরা দেখেছি। আমাদের তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’’ আজ সুরাতের বিভিন্ন মন্দিরে পুরোদমে জন্মাষ্টমীর উৎসব পালিত হয়। তবে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বিধি মেনেই অনুষ্ঠান করেছেন তাঁরা।
কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশে এখনও পর্যন্ত ৪৯ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তাদের রাজ্যের প্রত্যেককে প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়ে যাবে বলে ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রদেশ ও কেরল। হিমাচলপ্রদেশ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই এই কাজ শেষ করেছে। উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, গুজরাত, দিল্লি, কর্নাটকের মতো রাজ্যও সেপ্টেম্বরকে লক্ষ্য রেখেই এগোচ্ছে। টিকাকরণের হার কম হওয়ায় উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, বিহারে প্রথম ডোজ় শেষ হতে হতে অক্টোবর পেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নভেম্বর ও ডিসেম্বরে অধিকাংশ রাজ্যেই দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া শুরু করার নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র।
এই বছরের শেষেই ৯৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের প্রত্যেকের টিকাকরণ সম্ভব হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এর জন্য প্রয়োজন ১৮৮ কোটি ডোজ়, যা ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানাচ্ছেন শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্তারা। তবে তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, ৮০ শতাংশ মানুষকে ডিসেম্বরের মধ্যে টিকার দু’টি ডোজ় দেওয়া সম্ভব হলেও গ্রামাঞ্চলে টিকা নিয়ে আতঙ্কের জন্য বাকি ২০ শতাংশ নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। দিল্লিতে গত চার দিন ধরে মৃত্যু সংখ্যা শূন্য। অরবিন্দ কেজরীবাল সরকারের দাবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।