তদন্তকারীদের দাবি, অপ্সরাকে খুনের পর মন্দিরের পিছনে এই (বাঁ দিকে) ম্যানহোলে ফেলে দেন অভিযুক্ত পুরোহিত। ছবি: সংগৃহীত।
মন্দিরের এক তরুণী দর্শনার্থীকে খুনের পর তাঁর দেহ লোপাট করতে ম্যানহোলে ফেলে দিয়ে তাতে মাটি চাপা দিয়ে দেন। এর পর পুলিশের কাছে গিয়ে ওই তরুণীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন ওই মন্দিরের পুরোহিত। তেলঙ্গানার ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছে পুলিশ। খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারির পর শুক্রবার ওই ম্যানহোল থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধারে নেমেছে তারা
তেলঙ্গানার শামশাবাদের বাসিন্দা ৩০ বছরের কে অপ্সরাকে খুনের অভিযোগে বেঙ্কটেশ্বর কলোনির এক মন্দিরের পুরোহিত অয়ঙ্গিরি শ্রীকৃষ্ণকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
৫ জুন আরজিআই এয়ারপোর্ট থানায় গিয়ে অপ্সরার নিখোঁজ হওয়ায় অভিযোগ দায়ের করেন শ্রীকৃষ্ণ। পুলিশের কাছে অভিযোগপত্রে তাঁর দাবি ছিল, ৩ জুন থেকে বোনের মেয়ে অপ্সরার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সে দিন এক বন্ধুর সঙ্গে গাড়িতে করে ভদ্রাচলম এলাকায় যাওয়ার কথা ছিল অপ্সরার। সে জন্য অপ্সরাকে শামশাবাদে ছেড়ে এসেছিলেন তিনি। তবে পরের দিন থেকে ফোন করলেও অপ্সরা তা ধরেননি। ৫ জুন থেকে অপ্সরার ফোন বন্ধ শোনাচ্ছে।
নিখোঁজ ডায়েরি করে এই অভিযোগের তদন্তে নামে পুলিশ। যদিও তদন্তকারীদের দাবি, নানা তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের কথাবার্তায় অসঙ্গতি ধরা পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরোহিতকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভেঙে পড়ে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।
আরজিআই এয়ারপোর্ট থানার ইনস্পেক্টর আর শ্রীনিবাস সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘‘অপ্সরার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এক সন্তানের পিতা শ্রীকৃষ্ণ। বিয়ে করার জন্য বার বার চাপ দেওয়ায় তরুণীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেন অভিযুক্ত।’’
শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকেই অপ্সরার দেহের সন্ধান পান বলে জানিয়েছে পুলিশ। শ্রীনিবাসের নেতৃত্বে শুক্রবার পুলিশের একটি দল বেঙ্কটেশ্বর কলোনিতে পৌঁছয়। সেখানে মন্দিরের পিছনে একটি ম্যানহোল থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার চেষ্টা শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশের দাবি, অপ্সরার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় ছিল শ্রীকৃষ্ণের। অভিযোগ, শামশাবাদ গ্রামীণ থানায় এলাকায় একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পাথর দিয়ে থেঁতলে তাঁকে খুনে করেন। এর পর গাড়িতে করে তাঁর দেহ নিয়ে আসেন মন্দিরের পিছনে। সেখানকার একটি ম্যানহোলে দেহটি ফেলে মাটি চাপা দিয়ে দেন। শ্রীকৃষ্ণের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।