ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় মাসখানেক ধরে চলা তেলঙ্গানার বাস ধর্মঘটের মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তলব করল হাইকোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাওয়ের হুঁশিয়ারি ও কাজে ফেরার আবেদনকে অগ্রাহ্য করেই অবশ্য পরিবহণ কর্মীদের ধর্মঘট চলছেই।
সড়ক পরিবহণ নিগমের কর্মীদের বকেয়া কত, সেই হিসেব নিয়ে রাজ্য সরকার ও নিগমের কর্তাদের বক্তব্যে ভিন্ন সুর দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ আদালত। আগামী ৭ নভেম্বর মুখ্যসচিব ছাড়াও তেলঙ্গানা স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল শর্মা ও গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কমিশনার লোকেশ কুমারকে ডেকে পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। এর আগে সড়ক পরিবহণ কর্মীদের বকেয়া নিয়ে সুনীল শর্মা যে হিসেব দাখিল করেছেন, তা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে মিলছে না বলে জানিয়ে ছিল হাইকোর্ট। এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আধিকারিকদের তলব করা হয়েছে।
পরিবহণ কর্মীদের ধর্মঘট আজ ৩১ দিনে পড়ল। কর্মীদের কাজে ফেরার জন্য আগামিকাল, ৫ নভেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছেন চন্দ্রশেখর রাও। তিনি জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহণ নিগমের হাতে থাকা ৫১০০ বাসরুটের বেসরকারিকরণ হবে। কর্মীরা সেই প্রস্তাবে রাজি নন। মুখ্যমন্ত্রী আরও এক কদম এগিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ধর্মঘটী কর্মীরা যদি এই প্রস্তাব না-মানেন, সে ক্ষেত্রে বাকি ৫০০০ রুটেরও বেসরকারিকরণ করা হবে। কর্মীদের জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি (জেএসি) জানিয়ে দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেও কাজে ফিরবে না তারা।
আরও পড়ুন: সরকারি অফিসের ভিতরে পরতে হচ্ছে হেলমেট!
জেএসি-র আহ্বায়ক অশ্বত্থমা রেড্ডি ধর্মঘটী কর্মীদের ভয় না-পেয়ে, আত্মসম্মান বজায় রাখতে আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, এর আগেও কর্মীদের কাজে ফেরার সময়সীমা বেধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময়েও কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনে নেননি। রেড্ডির দাবি, কোনও কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার অধিকার মুখ্যমন্ত্রীর নেই। ৫ অক্টোবর থেকে চালু থাকা ধর্মঘটের জেরে ইতিমধ্যেই ১০ জন কর্মী মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে তিন জন আত্মঘাতী হয়েছেন। রেড্ডি জানিয়েছেন, অচলাবস্থা কাটাতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন তাঁরা।
রাজ্য সড়ক পরিবহণ নিগমের আধিকারিকেরা আশাবাদী, মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে আগামিকাল থেকে কাজে যোগ দেবেন অনেক কর্মী। তবে আজও ধর্মঘটী কর্মীরা বাস ডিপোগুলি দখল করে বসে রয়েছেন। হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার অঞ্জনি কুমার জানিয়েছেন, যে সব কর্মী কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।