স্টেশনের কাছে একটি উদ্যানে ওই নাবালিকাকে নিয়ে যান যুবকেরা। প্রতীকী ছবি।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর মুক্তির স্বাদ পেতে ঘুরতে বেরিয়েছিল নাবালিকা। কিন্তু ইচ্ছাপূরণ হল না তার। পাঁচ মাসের মধ্যে পর পর দু’বার লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে হাতবদল হতে হল তাকে। সোমবার সকালে মধ্যপ্রদেশের কোটা রেলস্টেশন থেকে ১৭ বছরের নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়।
শিশু সুরক্ষা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে যে, রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল সে। রেলপুলিশের নজরে পড়ায় নাবালিকাকে স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে, মধ্যপ্রদেশের কাটনি এলাকার বাসিন্দা সে। দশম শ্রেণীর পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছিল সে। কাটনি রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল নাবালিকা। তার অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন যুবক তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান। স্টেশনের কাছে একটি উদ্যানে ওই নাবালিকাকে নিয়ে যান যুবকেরা। নাবালিকার দাবি, তাকে কিছু খাবার এবং পানীয়ও দেন তাঁরা। খাওয়ার কিছু ক্ষণ পর অচেতন হয়ে পড়ে সে।
জ্ঞান ফেরার পর নাবালিকা দেখে, তিন জন অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে উজ্জয়িনীর একটি হোটেলে রয়েছে সে। নাবালিকার অভিযোগ, হোটেলের ঘরে উপস্থিত ছিলেন দুই পুরুষ এবং এক মহিলা। ২৭ বছর বয়সি এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে করার জন্য নাবালিকাকে জোর করা হয় বলে অভিযোগ। বিয়ের পর সে জানতে পারে যে, তাকে দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে কেনা হয়েছে। নাবালিকা জানায়, বিয়ের কিছু দিন পর তার স্বামী মারা যান। ভুলবশত কীটনাশক খেয়ে ফেলেন তিনি। স্বামী মারা যাওয়ার পর নাবালিকার শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা আবার নাবালিকার বিয়ে দেন।
কোটা জেলার কানওয়াস এলাকায় নাবালিকাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেই আবার অন্য জনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় নাবালিকাকে। তার দাবি, বিয়ের জন্য ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে আবার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বার বার এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালায় সে। স্থানীয় রেলস্টেশন থেকে কোটা যাওয়ার ট্রেনে উঠে পড়ে। শিশু সুরক্ষা কমিটি জানিয়েছে, কোটা স্টেশনে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছিল নাবালিকা।
রেল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে শিশু সুরক্ষা কমিটিতে খবর দেয়। নাবালিকার বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান যে, পাঁচ মাস আগে স্থানীয় থানায় মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। শিশু সুরক্ষা কমিটির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বুধবার নাবালিকাকে তার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।