(বাঁ দিকে) অতুলের বাবা পবন মোদী এবং অতুল সুভাষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরুর যুবক অতুল সুভাষকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রবিবার সকালেই তাঁর স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুধু নিকিতা নয়, তাঁর মা এবং ভাইকেও হেফাজতে নিয়েছেন তদন্তকারীরা। নিকিতার গ্রেফতারির পরই অতুলের বাবা পবন মোদী তাঁর নাতির খোঁজ শুরু করলেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমার চার বছরের নাতি কোথায় আছে?’’ তাকে নিয়ে পরিবার উদ্বিগ্ন বলেও জানান পবন।
সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’-এর সঙ্গে কথা বলার সময় পবন জানান, নিকিতা এবং তাঁর পরিবারকে গ্রেফতার করা পুলিশকে ধন্যবাদ। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা জানি না ও (নিকিতা) আমাদের নাতিকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে। আদৌ সে বেঁচে আছে, নাকি খুন করে ফেলেছে বুঝতে পারছি না। তার সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছি না। আমাদের নাতিকে আমরা ফেরত চাই।’’
পবনের দাবি, যত ক্ষণ পর্যন্ত না বিচার পাচ্ছি, তত ক্ষণ অতুলের অস্থি জলে ফেলবে না বলে ঠিক করেছে পরিবার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ধার্মিক, কিন্তু ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত অতুলের অস্থি বিসর্জন করব না আমরা।’’ একই সঙ্গে জৌনপুরের আদালতের বিচারককে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিযোগ করেন অতুলের বাবা।
২০২০ সালে নিকিতা এবং অতুলের একটি পুত্র সন্তান হয়। কিন্তু পবনের অভিযোগ, জন্মের পর থেকে তাঁরা নাতিকে দেখেননি। কারণ, নাতি জন্মের এক বছর পরই অতুল এবং নিকিতা আলাদা থাকা শুরু করেন। পবনের কথায়, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের কাছে অনুরোধ করেছি যাতে আমাদের নাতির সুরক্ষা নিশ্চিত করেন। আমি আমার নাতিকে শুধু এক বার ভিডিয়ো কলে দেখেছি। তা-ও অনেক আগে।’’
অতুল আত্মহত্যা করার পর থেকেই বার বার নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সোমবার ভোরে নিজের ঘর থেকে বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত যুবক অতুলের দেহ উদ্ধার হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিদায়ী ভিডিয়ো ছাড়াও ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট রেখে যান অতুল, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ রয়েছে! উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের পারিবারিক আদালতে অতুল-নিকিতার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। অতুলের পরিবারের অভিযোগ, মামলা চলাকালীন টাকা আদায় করতে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে পণ চাওয়া, অস্বাভাবিক যৌনতা, বধূ নির্যাতন এবং খুনের চেষ্টার মতো নানা গুরুতর অভিযোগে অতুলকে ফাঁসানো হয়।