আগরতলায় পুলিশের মুখ্য কার্যালয়ের সামনে ধর্নায় সুস্মিতা দেব-সহ দলের নেতা কর্মীরা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা প্রার্থীদের উপরে শারীরিক আক্রমণ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদে আজ আগরতলায় পুলিশের মুখ্য কার্য্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসলেন সুস্মিতা দেব-সহ দলের নেতা কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যে পুর সংস্থার নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, বিরোধীদের উপর সন্ত্রাস এবং আক্রমণের মাত্রা তত বাড়ছে। বুধবার তৃণমূলের এক প্রার্থী আক্রান্ত হয়েছেন। বিজেপির দুষ্কৃতীরা আর এক প্রার্থীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের উদ্দেশে বলেছেন, “ওই ঘটনাগুলি বিজেপি ঘটাচ্ছে, এমন তথ্য প্রমাণ দেখালেই পারেন ওঁরা।”
ধর্নাস্থলে সাংসদ সুস্মিতা সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনার ছবি এবং ভিডিয়ো থাকা সত্ত্বেও দোষীদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এমন আক্রমণ যে শুধু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এবং প্রার্থীদের উপরে হচ্ছে, তা নয়। আমাদের এই ধর্না সারা রাজ্যের সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করার জন্য। সুস্মিতার কথায়, “বিপ্লব দেব এক জন ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অধীনে থাকা পুলিশ রাজ্যের মানুষকে রক্ষা করতে ব্যর্থ।” রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের উপর বিশ্বাস নেই বিজেপির। তাই এই স্বৈরচারী সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এই করে তারা ভাবছে, তৃণমূলকে দমিয়ে দেবে। সন্ত্রাসে তৃণমূল ভয় পায় না। আমরা পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম-এর এই রকম বহু সন্ত্রাসের সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু তার পরেও কলকাতা পুর নিগমে ক্ষমতায় এসেছিলাম।” বিপ্লবের উদ্দেশে রাজীব চ্যালেঞ্জ ছুডে় বলেন, “সাহস থাকলে অত্যাচার বন্ধ করুন। মানুষকে নির্ভয়ে ভোট দিতে দিন। তা হলেই বোঝা যাবে কোথায় কত জল।”
ধর্নায় এ দিন সুস্মিতার সঙ্গে ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবল ভৌমিক, আগরতলা পুর নিগমের দুই আক্রান্ত প্রার্থী, পৌষালী দত্ত এবং অপর্ণা বিশ্বাস। তৃণমূলের আগরতলা পুর নিগমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পৌষালী জানিয়েছেন, বুধবার রঞ্জিত নগর এলাকায় প্রচারে গেলে বিজেপির বাইক বাহিনী তাঁকে এবং সঙ্গের লোকজনের উপরে হামলা করে। মারধর করে। পৌষালী রামনগর পুলিশ আউট পোস্টে অভিযোগ দায়ের করেছেন এ নিয়ে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে পুর নিগমের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাথী অপর্ণার উপর। বুধবার রাতে তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। প্রার্থীর ছেলে মোবাইলে সরাসরি সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে দেন। যা দেখে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ।
এরই প্রতিবাদে আজ সকালে ধর্না শুরু করে তৃণমূল। পরে চার জনের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল জি কে রাওয়ের সঙ্গে দেখা করে তাদের ক্ষোভ জানায়। বেরিয়ে এসে সুবল বলেন, “নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকদের উপরে বিজেপির দুষ্কৃতীরা যত আক্রমণ করেছে, তার সব তথ্য আজ ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল রাওয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” এর পরেও দলের কোনও প্রার্থী আক্রান্ত হলে পুলিশও ছাড় পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন সুবল।