Sushant Singh Rajput

রিয়ার ‘অওকাত’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা পুলিশ অফিসার এ বার বিহারে ভোটে প্রার্থী!

মেয়াদ শেষের আগে চাকরি ছাড়া অথবা নির্বাচনে তাঁর যোগ দেওয়ার খবর, কোনও কিছুর সঙ্গেই সুশান্তের মৃত্যুর কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন গুপ্তেশ্বর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:০৪
Share:

গুপ্তেশ্বর পান্ডে। —ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বিহারে। বেশ কিছু দিন ধরেই এমন অভিযোগ সামনে আসছিল। এ বার তা আরও উস্কে দিলেন বিহারের পুলিশ প্রধান (ডিজিপি) গুপ্তেশ্বর পান্ডে। নীতীশ সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রিয়া চক্রবর্তীর ‘অওকাত’ জানতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই তিনিই চাকরির মেয়াদ শেষের আগে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ভোটে লড়তে চলেছেন বলেছেন খবর।

এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছ থেকেও গুপ্তেশ্বর পান্ডে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। খাতায় কলমে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর তিন মাস কাজ করে যাওয়াটাই (কুলিং অফ পিরিয়ড) দস্তুর। কিন্তু গুপ্তেশ্বর পান্ডেকে সেই নিয়ম থেকেও ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও মেয়াদ শেষের আগে চাকরি ছাড়া অথবা নির্বাচনে তাঁর যোগ দেওয়ার খবর, কোনও কিছুর সঙ্গেই সুশান্তের মৃত্যুর কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন গুপ্তেশ্বর।

এমনকি, নির্বাচনে লড়া নিয়েও গা বাঁচিয়ে চলছেন তিনি। এ দিন সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে কি বলেছি যে ভোটে লড়ব? এখনও পর্যন্ত কোনও দলে যোগও দিইনি। যদি তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নিই, তাহলে নিশ্চয়ই জানাব। রাজনীতিই দেশ সেবার একমাত্র রাস্তা নয়। বক্সার, জেহানাবাদ, বেগুসরাই এবং অন্যান্য জেলা থেকে অনেক মানুষ আসছেন আমার কাছে। তাঁরা আমাকে কী ভাবে দেখতে চান, তা নিয়ে কথা বলব। তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অতীত ভুললে ভবিষ্যৎ অন্ধকার, বার্তা শুভেন্দুর​

তবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে এখনই পরিষ্কার ভাবে কিছু বলতে না চাইলেও, ১৯৮৭-র ব্যাচের আইপিএস অফিসার গুপ্তেশ্বর পান্ডে এর আগেও রাজনীতিতে আসতে চেয়েছিলেন। ২০০৯ সালে তৎকালীন বিহার সরকারের কাছেও স্বেচ্ছাবসরের আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। বক্সার থেকে সে বার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। বরং নীতীশ কুমারের মধ্যস্থতায় ফের কাজে ফিরতে হয় তাঁকে।

আসন্ন অক্টোবরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) হয়ে বক্সার জেলার শাহপুর থেকে গুপ্তেশ্বর পান্ডে ভোটে দাঁড়াতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা। তবে এমনটা হওয়ারই ছিল বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। দলের নেতা সচিন সবন্ত বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক গুরুত্বকে লঘু করে দেখাতেই ষড়যন্ত্র কষছে বিজেপি। বিহারের ওই ডিজিপিকে তার জন্য প্রথমে ব্যবহার করেছিল ওরা। এখন আবার পুরস্কৃত করছে। ওঁর স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকেই তা পরিষ্কার। সুশান্তের জন্য আদতে কোনও সমবেদনাই নেই বিজেপির। বিহার নির্বাচনের আগে ওঁর মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে ওরা। এখন আবার তার মধ্যে ফিল্মসিটিকেও টেনে আনছে।’’

সুশান্ত জীবিত থাকাকালীন, তাঁর অভিনীত ‘কেদারনাথ’ ছবির বিরুদ্ধে ‘লভ জিহাদ’ প্রচারের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ছবিটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতেও সরব হয়েছিল তারা। সেই বিজেপিই এখন সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সংসদের পরে আন্দোলন রাজ্যে, অনড় সরকার পক্ষ, বয়কটে বিরোধীরা​

এই গুপ্তেশ্বর পান্ডের হাত ধরেই সুশান্তের মৃত্যু বিহার রাজনীতিতে অন্য মাত্রা যোগ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ছেলের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা নয়ছয় এবং তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার মামলা দায়ের করেন সুশান্তের বাবা। তা নিয়ে বিহার পুলিশের তৎপরতার পিছনেও ছিলেন এই গুপ্তেশ্বর পান্ডে। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পর বিজেপি এবং সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ), দু’পক্ষই তার কৃতিত্ব দাবি করতে শুরু করে। সেইসময় নীতীশ সরকারের অভিসন্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রিয়া। তাতে রিয়াকেই পাল্টা কটাক্ষ করেন গুপ্তেশ্বর পান্ডে। নীতীশ কুমারের সমালোচনা করার কোনও অধিকারই রিয়ার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। এক জন আইপিএস অফিসারের এমন রাজনৈতিক মন্তব্য করা উচিত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে সেইসময়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement