পঞ্জাবে আন্দোলনরত কৃষকেরা। ছবি: পিটিআই।
পঞ্জাবের আন্দোলনরত কৃষকদের দাবিদাওয়া এবং প্রস্তাব শোনার জন্য আদালতের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। বুধবার এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়ালের ‘আমরণ অনশন’ কর্মসূচি বুধবার ২৩ দিনে পড়েছে। বুধবার দুপুরে পঞ্জাবের আন্দোলনরত কৃষকেরা রেল অবরোধেরও (রেল রোকো) ডাক দিয়েছিলেন। কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের মাঝে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে পঞ্জাবের আম আদমি পার্টির সরকার। সরকারের দাবি, আন্দোলনকারীরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন না। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আন্দোলনকারী কৃষকদের উপর পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়েছে। বুধবার ওই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চে। পঞ্জাব সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল গুরমিন্দর সিংহ জানান, সুপ্রিম কোর্টের গঠন করা উচ্চপর্যায়ের কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন না কৃষকেরা। আন্দোলনকারীরা চাইছেন সরাসরি আদালতের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার ওই কমিটি আন্দোলনকারী কৃষকদের আলোচনার ডেকে ডেকেছিল। কিন্তু কৃষকেরা তাতে রাজি ছিলেন না।
পঞ্জাব সরকারের বক্তব্য, তাদের আধিকারিকেরা কৃষকদের বোঝানোর জন্য বার বার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। এ কথা শুনে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলে, “আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আদালতের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। কৃষকেরা সরাসরি কিংবা অনুমোদিত প্রতিনিধি (আদালত নিযুক্ত কমিটি)-র মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়া এবং প্রস্তাব জানাতে পারেন।” অনশনরত কৃষকনেতা ডাল্লেওয়ালের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয় শীর্ষ আদালত। অবিলম্বে তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্যও পঞ্জাব সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসে রয়েছেন কৃষকেরা। ২৬ নভেম্বর কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করার পর আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।