—প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই পশ্চিমবঙ্গে অবাধে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে কি না সে ব্যাপারে শুনানি শেষ হল সুপ্রিম কোর্টে। তবে আপাতত এ নিয়ে রায়দান স্থগিত রেখেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
রাজ্যে সিবিআইকে অবাধে তদন্ত করার অনুমতি বা জেনারেল কনসেন্ট বহু দিন আগেই প্রত্যাহার করে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু সেই অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও রাজ্যে একের পর এক মামলায় এফআইআর করে তদন্ত করে চলেছে সিবিআই। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ওই অনুমতি প্রত্যাহারের তিন বছর পর ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে মামলা করে রাজ্য। কিন্তু গত তিন বছর ধরে সেই মামলা অমীমাংসিত হয়ে পড়েছিল শীর্ষ আদালতে। সম্প্রতি এই শুনানি দ্রুত শেষ করার জন্য কেন্দ্রকে কিছুটা তাড়া দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯ মে আদালতে গ্রীষ্মাবকাশ শুরুর আগেই মামলাটি নিষ্পত্তির করার কথা বলেছিল তারা। অবশেষে বুধবার মামলাটির শুনানি শেষ হল।
বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে শুনানি চলছিল এই মামলার। রাজ্যের পক্ষে সেখানে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। অন্য দিকে কেন্দ্রের তরফে হাজির ছিলেন, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
মূলত প্রশ্ন ছিল এটিই যে, সিবিআই কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত সংস্থা না কি তার স্বাধীন সত্তা রয়েছে? রাজ্যের যুক্তি ছিল, সিবিআই কেন্দ্রের অধীন। রাজ্যের হাতে যেমন পুলিশ থাকে তেমনই কেন্দ্রীয় সরকারেরও একটি হাত এই সিবিআই, ইডির মতো সংস্থাগুলি। রাজ্যের আইনজীবী সিব্বল বুধবারও সুপ্রিম কোর্টে বলেন, রাজ্যের অনুমতি না থাকলে কেন্দ্রও সিবিআইকে নির্দিষ্ট রাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারে না।
এ ব্যাপারে রাজ্যের অনুমতি এবং ছাড়পত্র সংক্রান্ত যে আইন, তার ছয় নম্বর ধারার কথাও তুলে ধরেন সিব্বল। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য অনুমতি দিলে তবেই একজন সিবিআই কর্তা পুলিশকর্তার মর্যাদা পান এবং একজন পুলিশকর্তা রাজ্যে যা যা করতে পারেন সেই ক্ষমতা তাঁর হাতেও আসে। এ ক্ষেত্রে সেই অনুমতি লঙ্ঘনের অর্থ এ সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করা। সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা। যা ‘ফেডারেলিজ়মের’ বিরোধী। যদিও এর পাল্টা কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল মেহতা বলেন, ‘‘সিবিআই একটি স্বাধীন সংস্থা। কেন্দ্র তাদের নিয়ন্ত্রণ করে না। কেন্দ্র কোনও এফআইআর দায়ের করে না। এই মামলা আসলে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে না করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে করা হয়েছে।’’ আপাতত দু’পক্ষেরই বক্তব্য শুনে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।