(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আদানি-অম্বানীদের নিয়ে তাঁর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খোঁচার ‘জবাব’ দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা লিখিত এবং ভিডিয়ো-বিবৃতিতে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাহুল এক্স হ্যান্ডলে মোদীকে নিশানা করে লিখেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীজি, আদানি-অম্বানী কি আপনাকে টেম্পো বোঝাই করে টাকা দেন? এটা কি আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা? এক কাজ করুন, তাঁদের কাছে আপনার সিবিআই, ইডি পাঠান। বিশদে তদন্ত করান। আতঙ্কিত হবেন না।’’
যে অস্ত্রে এত দিন রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকে আক্রমণ করেছেন বুধবার দুপুরে সেই অস্ত্রের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন মোদী। তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গলে লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রচারে গিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, পাঁচ বছর ধরে গলা ফাটিয়ে এখন আদানি-অম্বানী নিয়ে রাহুলেরা রাতারাতি চুপ করে গেলেন কেন? এর পরেই মোদীর প্রশ্ন, ‘‘ভোটঘোষণার পর তিনিও (রাহুল) কি এই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘টেম্পো বোঝাই’ টাকা নিয়েছেন?’’
অতীতে ফরাসী যুদ্ধবিমান রাফালের যন্ত্রাংশ তৈরির কয়েক হাজার কোটি টাকার বরাত বিনা টেন্ডারে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে দেওয়া অভিযোগ তুলে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল কংগ্রেস। গত বছর আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে ‘মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠী। সেবির বিধিকে ফাঁকি দিতে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কিনিয়েছে তারা। উদ্দেশ্য, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখা।
ওই রিপোর্ট প্রকাশের পরে, রাহুল-সহ কংগ্রেস সাংসদেরা অভিযোগের তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু মোদী সরকার সেই অভিযোগ মানেনি। লোকসভা ভোটের মধ্যপর্বে এসে সেই আদানি-অম্বানীদের ‘হাতিয়ার’ করেই বুধবার রাহুল ও কংগ্রেসকে নিশানা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ বছর ধরে কংগ্রেসের শাহজাদা একটাই কথা বলেন। রাফায়েল নিয়ে যখন কিছু হয়নি, তখন নতুন মন্ত্র পড়তে শুরু করে তিনি। ব্যবসায়ীদের নাম নিয়ে আক্রমণ করতেন। ধীরে ধীরে তিনি এখন আর অম্বানী-আদানিদের নাম নেন না। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাহুল তাঁদের নিয়ে আর কোনও কথা বলছেন না। অম্বানী এবং আদানিকে নিয়ে বাজে কথা বলাও বন্ধ করেছেন।’’
এর পরেই মোদীর মন্তব্য, ‘‘আমি তেলঙ্গানার মাটি থেকে তাঁকে প্রশ্ন করতে চাই, অম্বানীদের থেকে তিনি কত টাকা নিয়েছেন? বিষয়টি গোলমেলে। পাঁচ বছর ধরে গলা ফাটিয়ে রাতারাতি কেন চুপ করে গেলেন তিনি?’’ যার জবাবে রাহুল বলেছেন, ‘‘নমস্কার মোদিজি। কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছেন নাকি? সাধারণত আপনি বন্ধ ঘরে আদানিজি-অম্বানীজির কথা বলেন। এই প্রথম প্রকাশ্যে আদানি, অম্বানী বললেন। আর ওঁরা যে টেম্পো বোঝাই করে টাকা দেন, সেটাও আপনি জানেন? ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে নাকি? এক কাজ করুন। সিবিআই-ইডিকে ওঁদের কাছে পাঠান। ঘাবড়ে না গিয়ে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করান।’’
এর পরেই তাঁর ঘোষণা, ‘‘যত টাকা নরেন্দ্র মোদী ওঁদেরকে (আদানি-অম্বানী) দিয়েছেন, তত টাকা আমরা ভারতের গরিবদের দেব। ‘মহালক্ষ্মী যোজনা’, ‘প্রথম চাকরির নিশ্চয়তা যোজনা’ কার্যকরী করব। এঁরা (বিজেপি) ২২ জন ধনকুবের বানিয়েছেন। আমরা কয়েক কোটি লক্ষপতি বানাব।’’