সোমবার সকালে রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতি। যমুনা নদীতে ভাসছে ‘বিষাক্ত’ ফেনা। ছবি: পিটিআই।
রাজধানীর দূষণ সংক্রান্ত মামলায় সোমবার ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী তিন রাজ্যের সরকার। দূষণ মোকাবিলায় রাজধানী অঞ্চলে কড়াকড়ি জারি রয়েছে। যার জেরে আপাতত সমস্ত নির্মাণকাজ বন্ধ। কিন্তু কাজ বন্ধ থাকার জন্য নির্মাণ শ্রমিকদের ভাতা দেওয়ার কোনও প্রামাণ্য নথি শীর্ষ আদালতে জমা করতে পারেনি দিল্লি এবং রাজধানী অঞ্চলের তিন রাজ্য। তা নিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আবার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং রাজস্থানকে। পরের শুনানিতে চার সরকারের মুখ্যসচিবকে ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যখনই কোনও শীর্ষ আধিকারিককে ডাকা হয়, তাঁরা একে অন্যের দিকে দায় ঠেলাঠেলি শুরু করে দেন।
সোমবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এএস ওকা এবং বিচারপতি এজি মাসিহ্র বেঞ্চে দূষণ মামলার শুনানি হয়। রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকায় অসন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট মনে করছে, রাজধানী অঞ্চলের কোনও রাজ্যই নির্মাণকর্মীদের ভাতা দেওয়ার বিষয়ে আদালতের নির্দেশ মতো কাজ করেনি। এক পয়সাও যে কাউকে দেওয়া হয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ নেই। আদালতের বক্তব্য, তারা প্রমাণ চায়। তাই দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং রাজস্থানের মুখ্যসচিবকে পরবর্তী শুনানিতে ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত বলেছে, “আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যখনই কাউকে ডেকে পাঠানো হয়, দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়।”
আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালতের আশা, পরের শুনানিতে অন্তত একটি রাজ্য দেখাতে পারবে যে তারা নির্মাণ শ্রমিকদের ভাতা দিয়েছে। দিল্লির দূষণ মোকাবিলায় রাজধানী অঞ্চলে চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি (জিআরএপি ৪) জারি রয়েছে। আগের শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আদালতকে না জানিয়ে জিআরএপি ৪ শিথিল করা যাবে না। সোমবার দিল্লি সরকারের আইনজীবী জিআরএপি ৪ শিথিল করার অনুমতি চান আদালতের কাছে। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
রাজধানীর বাতাসের গুণমান গত এক মাস যাবৎ ‘খুব খারাপ’ (৩০১-৪০০) এবং ‘অতি ভয়ানক’ (৪০১-৫০০) পর্যায়ে ছিল। এই অবস্থা দিল্লি প্রশাসনকে উদ্বেগে ফেলে দেয়। দূষণ রোধে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। সোমবার দিল্লির বাতাসের গুণমান ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে না গেলেও তা সার্বিক ভাবে ‘খুব খারাপ’ নয়। সোমবার সকাল ৮টায় দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ‘খারাপ’ (২৭৩) পর্যায়ে ছিল। এই নিয়ে পর পর দু’দিন বাতাসের গুণমান ‘খারাপ’ পর্যায়ে সীমিত রাখা গিয়েছে।
সিপিসিবি তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণগত মানের সূচক যদি শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তা হলে তা ‘ভাল’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ সামান্য খারাপ, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ, ৪০১-৫০০ অতি ভয়ানক। আদালত জানিয়েছে, আগামী দিনে বাতাসের গুণমান সূচক নিম্নমুখী হওয়ার প্রবণতা দেখা গেলে কড়াকড়ি শিথিল করার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।