প্রতীকী চিত্র।
বিয়ের পরেই সেনার চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এক মহিলাকে। কারণ হিসাবে ওই মহিলার ‘বিয়ে’কেই হাতিয়ার করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় এ বার কেন্দ্র সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টিকে ‘লিঙ্গ বৈষম্য’-এর ‘বড়’ উদাহরণ বলেও মন্তব্য করে আদালত। সেই সঙ্গে ৬০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
জানা গিয়েছে, সেলিমা জন নামে এক মহিলা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নার্স হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে তাঁর বিয়ে হয়। তার পরই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন কর্তৃপক্ষ। তাঁকে যখন বরখাস্ত করা হয়, তখন তিনি লেফটেন্যান্ট পদে। কেন তাঁর চাকরি গেল, তার কারণ হিসাবে সেলিমার বিয়েকেই তুলে ধরা হয়েছিল।
তার পর মাঝে কেটে গিয়েছে অনেক বছর। ২০১২ সালে সেলিমা সশস্ত্র বাহিনীর ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হন। তারা মামলাকারীর পক্ষেই রায় দেয়। ট্রাইব্যুনাল জানায়, সেলিমাকে বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি। তাঁকে কাজে পুনর্বহাল করতে হবে। পরে ২০১৯ সালে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে কেন্দ্রীয় সরকার।
সেই মামলায় ধাক্কা খেল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করেনি। আদালত জানায়, আগের নির্দেশই বহাল থাকবে। শুধু তা-ই নয়, ট্রাইব্যুনালের রায়কে একটু সংশোধিত করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ কেন্দ্রকে বলে, সেরিনাকে ৬০ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
নির্দেশ দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ১৯৭৭ সালে একটি নিয়ম আনা হয়েছিল সেনাবাহিনীতে। সেই নিয়মে উল্লেখ করা হয়েছিল, বিবাহের কারণে সামরিক নার্সিং চাকরিতে কর্মরত কোনও সদস্যকে বরখাস্ত করা যাবে। যদিও ১৯৯৫ সালে সেই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়। তাই কেন্দ্রীয় সরকার সেই নিয়মের কথা বলতে পারে না। আদালত আরও বলেছে, ‘‘এই ধরনের নিয়ম স্পষ্টতই স্বেচ্ছাচারী ছিল। লিঙ্গবৈষম্যের এমন নিয়ম থাকা উচিত নয়। লিঙ্গভিত্তিক পক্ষপাত সংবিধান বিরোধী।’’