শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে কেন্দ্র।—ফাইল চিত্র
সাম্প্রতিক কালে বাক স্বাধীনতার মতো অধিকারের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার হচ্ছে। ওই সংক্রান্ত একটি মামলায় বৃহস্পতিবার এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লিতে তাবলিঘি জামাতের জমায়েত নিয়ে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়াচ্ছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এই অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল জমিয়তে উলেমা ই হিন্দ-সহ কয়েকটি সংগঠন। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এ দিন এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডে। পাশাপাশি তাঁর নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারপতির বেঞ্চ এ দিন হলফনামা দাখিলের প্রক্রিয়া নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করে।
গত ২৯ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মরকজ থেকে ২ হাজার ৩৬১ জনকে বার করে দিয়েছিল পুলিশ। তখন দেশে করোনা সংক্রমণ সবে ছড়াতে শুরু করেছে। সে সময় দিল্লির সেই ঘটনাকে ঘিরে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। গত ৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফেই জানিয়ে দেওয়া হয়, দেশের ৩০ শতাংশ করোনা সংক্রমণের সঙ্গে তাবলিঘি জামাতের যোগসূত্র রয়েছে। অবশ্য গত ৫ এপ্রিল সারা দেশে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৩৭৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল মোট ৭৭ জনের। জমিয়তে উলেমা ই হিন্দ-সহ কয়েকটি সংগঠনের অভিযোগ, করোনা সংক্রমণের সঙ্গে ওই ঘটনাকে জুড়ে ‘সাম্প্রদায়িক ঘৃণা’ ছড়াতে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েই তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন।
এর প্রেক্ষিতেই এ দিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ইদানীং কালে মত প্রকাশের অধিকারের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার হচ্ছে।’’ উল্টোদিকে সংবাদমাধ্যমের পক্ষে দাঁড়িয়ে এ দিন কেন্দ্র দাবি করে, ‘‘নেতিবাচক ভাবে প্রতিবেদন তুলে ধরার কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’ এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: ইটবৃষ্টি-বোমাবাজি, উদ্ধার হল পিস্তল, বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার
ফেক নিউজের প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আবেদনকারীরা যে রিপোর্টগুলির কথা তুলে ধরেছেন, তা নিয়ে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব কী ভাবেন তা আমাদের অবশ্যই জানাতে হবে। আবেদনকারীরা অভিযোগ করেছেন কিছু চ্যানেল ঘৃণা ছড়াচ্ছে। অথচ তা নিয়ে এই হলফনামায় কিছু বলা নেই। আমরা এটা চাতুর্য বলেই মনে করছি।’’ প্রসঙ্গত, তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবের বদলে এক জন অতিরিক্ত সচিবকে দিয়ে হলফনামা দাখিল করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই ঘটনাকে ‘‘চূড়ান্ত আপত্তিকর এবং নির্লজ্জতা’’ বলে ব্যাখ্যা করেছে শীর্ষ আদালত। এমনকি, ফের হলফনামাও চাওয়া হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক পর ফের আদালতে উঠবে ওই মামলা।
আরও পড়ুন: লাদাখে চিনের ‘একতরফা আগ্রাসন’-এর সব তথ্য ওয়েবসাইট থেকে মুছল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক