নিটে দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল দেশ। ছবি: পিটিআই।
সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় (নিট-ইউজি) বাড়তি নম্বর (গ্রেস মার্কস) কেন দেওয়া হল, দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতে এ বার পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-কে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। ৮ জুলাইয়ের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে এনটিএ-কে।
নিটে দুর্নীতি এবং বাড়তি নম্বরের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি ‘লার্নিং অ্যাপ’-এর তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, ১৫০০ জন পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছে। যার জেরে পরীক্ষার্থীদের র্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। মামলাকারীর আরও অভিযোগ, পরীক্ষার যে ওএমআর শিট দেওয়া হয়েছিল, তা অনেক পরীক্ষার্থীই পাননি। ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়েও এনটিএ-র কাছে জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
নিট পরীক্ষা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করার সময় তিনি নিটের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, “সরকার স্বচ্ছ ভাবে তদন্ত করতে বদ্ধপরিকর। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় যাঁরা দোষী প্রমাণিত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”
নিট নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার রাজ্য থেকে গ্রেফতার ২৬ জন। তার মধ্যে বিহার থেকে গ্রেফতার ১৩, ঝাড়খণ্ডে ৬, গুজরাতে ৫ এবং মহারাষ্ট্রে ২ জন গ্রেফতার হয়েছেন। প্রসঙ্গত, নিটে একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থান অধিকার করায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে। পরে জানা যায়, প্রশ্নপত্র এবং কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রে সময়জনিত সমস্যার জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু র্যাঙ্কিং নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই এই বাড়তি নম্বরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন মহল। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টেও। সেই মামলাতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। একটি হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র তাদের বক্তব্যও জানায়।
সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্র জানায়, ১৫৬৩ জন নিট পরীক্ষার্থীকে দেওয়া বাড়তি নম্বর বাতিল করা হবে। বদলে তাঁদের নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেবে কেন্দ্র। যাঁরা এই পরীক্ষা দিতে চান, ২৩ জুন এই পরীক্ষা দিতে হবে তাঁদের। কেন্দ্র আরও জানায়, পরীক্ষার স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৩ জুন সেই পরীক্ষা নেওয়া হয়। এনটিএ-র তরফে জানানো হয়, ১৫৬৩ জনের মধ্যে মাত্র ৮১৩ জন পরীক্ষায় বসেছিলেন। পরীক্ষায় বসেননি বাকি ৭৫০ জন পড়ুয়া।