—প্রতীকী চিত্র।
বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করার আর্জি নিয়ে একাধিক মামলা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে বিচারাধীন ছিল। বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, মামলাগুলি ওই এজলাস আর শুনবে না। বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি আপাতত চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পরে অন্য কোনও বেঞ্চে মামলাগুলির শুনানি হবে।
আগামী ১০ নভেম্বর পদ থেকে অবসর নেবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেটি রবিবার পড়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁর শেষ কাজের দিন ৮ নভেম্বর। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে বৈবাহিক ধর্ষণের মামলাগুলির শুনানি চলছিল। বুধবারও শুনানি ছিল। তবে একাধিক মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য আরও সময় চান। সে ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের ইঙ্গিত, ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের অবসরের আগে মামলাটির নিষ্পত্তির সম্ভাবনা নেই। প্রধান বিচারপতি বলেন, “নিকট ভবিষ্যতে এই মামলার শুনানি শেষ হওয়া সম্ভব নয়।”
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, চার সপ্তাহ পরে নতুন কোনও বেঞ্চে বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলাটিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী ৫ নভেম্বর আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে।
আরজি কর মামলার একাধিক আইনজীবীও যুক্ত রয়েছেন বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করার আর্জি সংক্রান্ত এই মামলায়। কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তো আছেনই। ইন্দিরা জয়সিংহ, করুণা নন্দীরাও রয়েছেন এই মামলায়। বুধবারের শুনানিতে মেহতা আরও এক দিন সময় চান বক্তব্য পেশ করার জন্য। পাশাপাশি রাকেশ দ্বিবেদী, মনিন্দর সিংহ, গোপাল শঙ্করনারায়ণ-সহ একাধিক আইনজীবীও সময় চান আদালতের কাছে।
একাধিক আইনজীবী বক্তব্য পেশ করার জন্য আরও সময় চাওয়ার কারণেই মামলাটির শুনানি চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন প্রধান বিচারপতি। জানান, চার সপ্তাহ পর অন্য কোনও বেঞ্চ মামলাটি শুনবে। প্রধান বিচারপতি মামলাটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতেই, আইনজীবী নন্দী অনুরোধ করেন সিদ্ধান্ত বদলের জন্য। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় যাতে মামলাটির শুনানি চালিয়ে যান, সেই অনুরোধ জানান নন্দী। প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে তিনি বলেন, “লাখ লাখ মহিলা এই মামলার শুনানির জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।” তবে তাতে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত কোনও বদল আসেনি।
প্রসঙ্গত, বৈবাহিক ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে তা ধর্ষণের মামলার আওতায় পড়ে না। সাবেক ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রম ২-এ উল্লেখ রয়েছে— স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ নয়। যদি না স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের নীচে হয়। বর্তমানে ভারতীয় ন্যায় সংহিতাতেও একই ধরনের ব্যতিক্রম রয়েছে। বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের আওতায় আনার দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একাধিক পক্ষ। গত ১৭ অক্টোবর থেকে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।