Bilkis Bano

বিলকিসের ধর্ষকদেরই কেন বেছে বেছে মুক্তি দেওয়া হল? গুজরাত সরকারকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

কেন সময়ের আগে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হল, এ নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতেও এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল গুজরাতের বিজেপি সরকারকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ২১:৫৭
Share:

সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

বিলকিস বানোর ধর্ষকদের কী ভাবে মুক্তি দেওয়া হল? বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের এই প্রশ্নের মুখে পড়ল গুজরাত সরকার। কেন সময়ের আগে বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হল, এ নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতেও এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল গুজরাতের বিজেপি সরকারকে।

Advertisement

গুজরাত সরকারের উদ্দেশে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘পাতলা বরফের উপর দাঁড়িয়ে আছে।’’ এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। ১৪ বছর জেল খাটার পর তাঁদের কী ভাবে ছেড়ে দেওয়া হল? অন্য বন্দিদের কেন ছেড়ে দেওয়া হল না? কেন এই অপরাধীদেরই (বিলকিস মামলায়) বেছে বেছে ছাড়া হল?’’ গুজরাত সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট আরও জানতে চায়, ‘‘জঘন্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যাঁরা, ১৪ বছর পর তাঁদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই নীতি কি বাকি বন্দিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? ভুল সংশোধন করার সুযোগ তো সকলেরই প্রাপ্য। এই সুযোগ কত জন পেয়েছেন? জেলগুলি কি উপচে পড়ছে? পরিসংখ্যান দিন।’’

বিলকিসের অপরাধীদের জন্য কিসের ভিত্তিতে জেল উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, তা-ও গুজরাত সরকারের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে আদালত। মামলার শুনানি সেখানে না-হওয়া সত্ত্বেও গোধরা আদালতের মতামত চাওয়া হল কেন, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। গুজরাত সরকারের হয়ে সওয়াল করেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। তিনি জানান যে, আইন মেনেই সকল অপরাধীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রাজু আরও জানান যে, যে হেতু বিলকিসের ধর্ষকেরা ২০০৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাই ১৯৯২ সালের নীতি বিবেচনা করা হয়েছে।

Advertisement

গত বছরের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী রাধেশ্যাম শাহ। আবেদনপত্রে তিনি জানিয়েছিলেন যে, ১৫ বছর চার মাস জেল খেটেছেন তিনি। তাই তাঁর সাজা মকুব করা হোক। এর পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ওই অপরাধীর সাজা মকুব করা হবে কিনা, সেই ব্যাপারে দু’মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পরই সব অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এই নিয়ে বিতর্ক বাধে। বিতর্কের মধ্যেই গুজরাত সরকার জানায় যে, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন, সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দাবি করে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিলকিসও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement