ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের চিত্রকূট কারাগারে তিন জন বিচারাধীন বন্দিকে গুলি করে মারার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। ওই ঘটনায় সিবিআই বা এনআইএ-কে দিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন আইনজীবী অরুণ প্রকাশ অবস্থি। ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সে রাজ্যে একাধিক বিচার বহির্ভূত খুন নিয়ে সিবিআই বা এনআইএ তদন্তের দাবিও ওই আবেদনে জানিয়েছেন আইনজীবী অবস্থি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৪ মে চিত্রকূট জেলা কারাগারের মধ্যে তিন জন বিচারাধীন বন্দিকে গুলি করে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় দু’জন জেল আধিকারিককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। নিহত তিন জনের মধ্যে একজন বহুজন সমাজ পার্টির বিধায়ক মুখতার আনসারির দলের সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। নিহতদের যে পরিচয় পুলিশ প্রকাশ করেছে, তাতে জানা গিয়েছে, তাঁরা হলেন সীতাপুরের অংশু দীক্ষিত, গাজিপুরের মিরাজউদ্দিন ওরফে মিরাজ আলি এবং শামলি জেলার মুকিম কালা।
আইনজীবীদের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশে যে ভাবে আইনের তোয়াক্কা না করে বিচার বহির্ভূত ভাবে হিংসাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তা সভ্য সমাজের পরিপন্থী। চিত্রকূট জেলে খুনের ঘটনাটি সম্পর্কে পুলিশ তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, বিচারাধীন বন্দি অংশু দীক্ষিত গুলি চালিয়ে বাকি দু’জনকে খুন করার পরে তাকে নিরস্ত করতে গিয়ে পুলিশ গুলি চালায়। তাতেই অংশুর মৃত্যু হয়। কিন্তু পুলিশের এই বক্তব্য বিশ্বাস করতে নারাজ অনেকেই। অভিযোগ, যোগী আমলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বিনা বিচারে একাধিক ‘অপরাধী’কে শাস্তি দেওয়ার নাম করে খুন
করেছে। ফলে এই খুনের পিছনে অন্য ধরনের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। নিহত দুই বন্দি মিরাজউদ্দিন এবং মুকিম কালাকে ১৪ মে-র কয়েক দিন আগেই ওই জেলে স্থানান্তরিত করা হয়।
রহস্য আরও বাড়িয়ে আইনজীবী অবস্থি তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, ‘খুনে’র ঘটনার কয়েক দিন আগেই অংশুর একটি ভিডিয়ো স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়, সেখানে সে দাবি করে, কারা কর্তৃপক্ষ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে তাকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সে জানতে পেরেছে। তার ক’দিন পরেই ওই খুনের ঘটনা তাই বহু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই বা এনআইএ তদন্ত হলে এই রহস্যভেদ করা সম্ভব হবে বলে আবেদনে জানিয়েছেন আইনজীবী অবস্থি।