দম্পতিকে শীর্ষ আদালত বলে, ‘‘বিয়ের পর নিজেদের জন্য আপনাদের সময় কোথায়? আপনারা দু’জনেই সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।’’ —প্রতীকী চিত্র।
বিচ্ছেদ চাইতেই পারেন, কিন্তু বিয়ের পর সত্যিই নিজেদের সময় দিয়েছিলেন তো? ডিভোর্সের আর্জি নিয়ে হাজির হওয়া এক ইঞ্জিনিয়ার দম্পতিকে এমনই প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পরামর্শ, বিবাহবিচ্ছেদের জন্য হয়তো যুগলের কোনও অনুতাপ থাকবে না। কিন্তু বিয়ের পর নিজেদের সময় না দিতে পারার খেদ হয়তো থেকেই যাবে।
বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর এক দম্পতি। দু’জনেই পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। দুই তরফই তড়িঘড়ি বিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ওই মামলাটি ওঠে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বিভি নগরত্নের ডিভিশন বেঞ্চে। আদালতের পরামর্শ, বিচ্ছেদের আগে নিজেদের দ্বিতীয় সুযোগ দিন ওই দম্পতি। আদালত বলে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই প্রতিষ্ঠিত। নিজেদের কর্মজীবনে ব্যস্ত। কিন্তু জীবনসঙ্গীকে তাঁরা পর্যাপ্ত সময় দেন তো? সঙ্গীর সঙ্গে ভাল এবং মন্দ লাগার অনুভূতি ভাগ করেছেন? বিচ্ছেদ চাইতে আসা দম্পতিকে শীর্ষ আদালত বলে, ‘‘বিয়ের পর নিজেদের জন্য আপনাদের সময় কোথায়? আপনারা দু’জনেই সফ্টঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বেঙ্গালুরুতে কর্মরত। এক জন দিনের বেলা কাজে বেরিয়ে যান। অন্য জন রাতে। বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আপনাদের মধ্যে কোনও অনুশোচনা নেই। কিন্তু বিয়ের জন্য অনুশোচনা আছে!’’ শুধু এখানেই শেষ নয়। বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, ‘‘বেঙ্গুলুরু এমন জায়গা নয়, যেখানে আকছার ডিভোর্স হয়। তাই আপনারা নিজেদের আরও এক বার সময় দিন।’’
প্রসঙ্গত, হিন্দু বিবাহ আইনের ১৩বি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ডিক্রির মাধ্যমে ‘মিউচুয়াল ডিভোর্স’-এর জন্য আবেদন করেছিলেন দম্পতি। শীর্ষ আদালতে দু’জনের আইনজীবীরা জানান মোট ১২ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে স্বামীকে। এই খোরপোশের শর্তে দু’পক্ষই রাজি হয়ে গিয়েছে। শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় বিবাহবিচ্ছেদের আইনের পাশাপাশি, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি আবেদন রেকর্ড করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, নিষ্পত্তি চুক্তির শর্তাবলী আইনসম্মত এবং মীমাংসার শর্তাবলী গ্রহণ করার জন্য কোনও আইনি বাধা নেই। তাই পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদ করা যাবে। কিন্তু তার আগে এক বার দম্পতিকে ভেবে দেখতে বলল সুপ্রিম কোর্ট।