Ministers from Bengal in Modi Government

নতুন এনডিএ মন্ত্রিসভায় বাংলার দু’জন! মোদীর বাসভবনে ডাকা বৈঠকে ছিলেন সুকান্ত ও শান্তনু

বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বালুরঘাট থেকে এ বারেও জিতেছেন। বিজেপি সূত্রে খবর, শান্তনু ঠাকুরের পাশাপাশি তাঁকেও মন্ত্রী করা হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪ ১৪:০৯
Share:

রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে চা-চক্র। ছবি: পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে চলেছেন বাংলার দু’জন সাংসদ। এমনটাই খবর মিলেছে বিজেপির সূত্রে। এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা হয়নি মন্ত্রীদের নাম। রবিবার সন্ধ্যায় মোদী তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করবেন। তার আগে সকালে নিজের বাসভবনে কয়েক জনকে তিনি চা-চক্রে ডেকেছিলেন। জল্পনা ছিল, যাঁরা এই চা-চক্রে ডাক পেয়েছেন, তাঁরাই মন্ত্রিসভাতেও জায়গা পাবেন। চা-চক্রে ছিলেন বাংলার দুই প্রতিনিধি— সুকান্ত মজুমদার এবং শান্তনু ঠাকুর। বিজেপি সূত্রে খবর, তাঁরা দু’জনই মন্ত্রী হচ্ছেন। তবে এ বারও পূর্ণমন্ত্রী পাচ্ছে না বাংলা। সুকান্ত এবং শান্তনু উভয়েই প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন। শান্তনু জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এ বার কোন দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়, সেটা দেখার। সেই সঙ্গে সুকান্ত কোন মন্ত্রকের দায়িত্ব পাবেন, সে দিকেও নজর থাকবে।

Advertisement

বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে রয়েছেন সুকান্ত। তিনি বালুরঘাটের সাংসদ। লোকসভা ভোটে এ বারও ওই কেন্দ্র থেকে জিতেছেন। তারই পুরস্কার হিসাবে সুকান্তকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মত অনেকের। শান্তনুকে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল ২০২১ সালে। তিনি বাংলায় মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি। বাংলায় বিজেপির ভোটব্যাঙ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মতুয়া ভোট। যে কারণে মন্ত্রিত্বের হিসাবে শান্তনু বরাবর বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে এসেছেন। রাজ্য বিজেপির অনেকে বলছেন, শান্তনু বনগাঁ অর্থাৎ দক্ষিণবঙ্গের প্রতিনিধি। সেই হিসাবে মন্ত্রী হিসাবে দ্বিতীয় জনকে উত্তরবঙ্গ থেকেই বাছতে হত মোদীকে। সুকান্তকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সেটাও ‘ফ্যাক্টর’ হিসাবে কাজ করে থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে সুকান্ত রবিবার বলেন, ‘‘দল আমাকে যখন যে দায়িত্ব দেবে, তা সামলাব। আমাদের মাঝে মাঝে কাজের ধরন পরিবর্তিত হয় মাত্র। কিন্তু কাজটা কাজই। যে দফতরে দেওয়া হবে আমাকে, সেখানে নরেন্দ্র মোদীর নীতি অনুসারে কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করব। আপাতত আমি আর শান্তনু ঠাকুর প্রতিমন্ত্রী হচ্ছি। আমার জেলার জন্য এটা সুখবর। কারণ, স্বাধীনতার পর এই প্রথম কেউ আমার জেলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছেন। আমাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বই দেওয়া হচ্ছে। তবে দফতর এখনও জানানো হয়নি। শপথগ্রহণের পর দফতর জানানো হবে।’’

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। এনডিএ-র সকল জয়ী প্রার্থীকে সেখানে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই পৌঁছে যাবেন সকলে। এ ছাড়াও ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বিক্রমসিঙ্ঘে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর মতো রাষ্ট্রনেতারা থাকবেন। ইতিমধ্যে তাঁরা দিল্লিতে পৌঁছেও গিয়েছেন।

২০১৪ সালে মোদী যখন প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হলেন, বাংলা থেকে দু’জনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। তাঁর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। পরের বার অর্থাৎ, ২০১৯ সালে মোদী বাবুলের সঙ্গে মন্ত্রী করেন দেবশ্রী চৌধুরীকে। তার পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে এই দু’জনকেই মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন বাংলার চার জন। বনগাঁর শান্তনুকে ওই সময়েই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জাহাজ প্রতিমন্ত্রী হিসাবে। এ ছাড়া, নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা এবং সুভাষ সরকারও মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন। তবে প্রত্যেকেই প্রতিমন্ত্রী। মোদীর কোনও মন্ত্রিসভায় এখনও পর্যন্ত বাংলা থেকে কাউকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

চার মন্ত্রীর মধ্যে বার্লাকে এ বার লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়া হয়নি। নিশীথ এবং সুভাষ হেরে গিয়েছেন। মন্ত্রীদের মধ্যে জিতেছেন কেবল শান্তনু। তাঁকে মন্ত্রিসভায় রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আনা হচ্ছে নতুন মুখও।

বাংলা থেকে এ বারের মোদী মন্ত্রিসভায় কারা জায়গা পাবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। তমলুকের জয়ী প্রার্থী তথা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, আলিপুরদুয়ারের জয়ী প্রার্থী মনোজ টিগ্গার নাম শোনা যাচ্ছিল। অনেকেই বলছিলেন, এঁদের কোনও না কোনও মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে সুকান্ত এবং শান্তনু ছাড়া আর কেউ মন্ত্রিত্ব পাচ্ছেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement