মহুয়া মৈত্র এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিক থেকে)। —ফাইল চিত্র।
সংসদে ‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের পাশে আগেই দাঁড়িয়েছেন কুণাল ঘোষ, ফিরহাদ হাকিমরা। এ বার কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ জানিয়ে দিলেন, এথিক্স কমিটির বৈঠক ত্যাগ করে বেরিয়ে আসা ছাড়া অন্য উপায় ছিল না মহুয়ার। পাশাপাশি, তিনি এ-ও জানান, মহুয়া তাঁর দলের ঠিক করা রাস্তাতেই এগিয়েছেন। মোদী সরকার এবং আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ানোয় মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘প্রতিহিংসামূলক আচরণ’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন’ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে লোকসভার এথিক্স কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে। প্রথমে দুই অভিযোগকারী এবং পরে মহুয়ার কথা শোনা হয়। যদিও কমিটির বৈঠকের মাঝপথেই বেরিয়ে যান মহুয়া। তাঁকে সমর্থন করেন বিরোধীপক্ষের সাংসদেরা। তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ ছিল, তাঁকে ‘ব্যক্তিগত এবং অপমানজনক’ প্রশ্ন করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপির সাংসদ বিনোদ সোনকর। রাতে কার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, এমন সব অকিঞ্চিৎকর এবং একান্ত ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা হচ্ছে। এ নিয়ে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপেরই মত একই। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিকে এটাকে (টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ) বড় ভাবে নিয়েছে। কারণ আদানি এবং মোদীর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে বলে আসছে মহুয়া।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘দলের রাস্তা মেনে উচ্চতর পর্যায়ে সুর চড়া করে ও। সাংসদ হিসেবে ও (মহুয়া) সুনাম অর্জন করেছে। দলতন্ত্র মেনেই কাজ করেছে।’’
কিন্তু এথিক্স কমিটি ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ’ করেছে বলে অভিযোগ করেন সুদীপ। তিনি বলেন, ‘‘এই অবস্থায় বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসা ছাড়া মহুয়ার কোনও উপায় ছিল না।’’
উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এথিক্স কমিটি। বৃহস্পতিবার কমিটির ডাকে সাড়া দেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া।
তবে এই পুরো বিতর্কে প্রথমে তৃণমূল দূরত্ব বজায় রেখেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক’ও ব্রায়ান জানিয়েছেন, এথিক্স কমিটির তদন্তের পর দল মহুয়াকে নিয়ে যা পদক্ষেপ করার করবে। তবে এমতাবস্থায় মহুয়ার পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। ফিরহাদ বলেন, ‘‘মহুয়া যে হেতু বেশি ‘ভোকাল’, তাই এ রকম করা হচ্ছে।’’একই সঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘মহুয়া নিজে যথেষ্ট সাবলীল এই বিষয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য।’’ শুক্রবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের আর এক সাংসদ শতাব্দী রায়। তিনি বলেন, ‘‘মহুয়ার জনপ্রিয়তা বেশি। তাই তাঁকে নিশানা করছে বিজেপি।’’ তবে খোদ তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপের মহুয়ার পাশে দাঁড়ানো আলাদা ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।