জলপাই পোশাকে আইসি (বাঁ দিকে)। সাদা পাঞ্জাবি-পাজামায় মন্ত্রী তাজমুল হোসেন (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
জলপাই পোশাকে হাসি হাসি মুখে দাঁড়িয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর আইসি দেবদূত গজ়ম। তাঁর দিকে হাসি মুখে উপহার এগিয়ে দিচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন। বিধায়কের পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির হাত থেকে নতুন জামাও নিলেন আইসি। ওই ভিডিয়ো (এর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন মন্ত্রী এবং পুলিশ অফিসার দু’জনেই।
বিজেপির অভিযোগ, থানায় নিজের ঘরে পুলিশের উর্দি পরে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়কের কাছ থেকে ‘পুজোর জামা’ নিয়েছেন আইসি দেবদূত। বিতর্কের মুখে মন্ত্রী বলছেন, ‘এটা সৌজন্য’। বিরোধীরা বলছেন, পুলিশ এবং শাসকদলের নেতাদের মধ্যে যে দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক, তা এই ভিডিয়োতেই পরিষ্কার। তাদের প্রশ্ন, এর পরও বিরোধীরা কী ভাবে আশা করবেন যে কোনও রাজনৈতিক অশান্তিতে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে পুলিশ? গোটা বিতর্কে মুখ খুলতে নারাজ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব। অন্য দিকে, আইসির দাবি, তিনি শুধু ফুল নিয়েছেন।
মন্ত্রী এবং পুলিশ অফিসারের যে ভিডিয়ো এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল, সেটি নবমীর রাতের ঘটনা বলে খবর। অভিযোগ, সে দিন হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গিয়ে আইসি-কে ‘পুজোর উপহার’ দেন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক তাজমুল। এ নিয়ে বিজেপির দক্ষিণ মালদহের সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘পুলিশ আর তৃণমূল নেতাদের মধ্যে কোনও দূরত্ব নেই। লুকোছাপা নেই। কোথাও পুলিশই দল (তৃণমূল) চালাচ্ছে। কোথাও দল (তৃণমূল) পুলিশকে চালাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের এটাই এখন পরিস্থিতি।’’
কিন্তু এই গোটা বিষয় নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাজমুল-ঘনিষ্ঠরা। তাজমুলের নিজের কথায়, ‘‘এটা সৌজন্য। পুজো উপলক্ষে সামান্য উপহার দিয়েছি আইসিকে।’’ তবে এই ভাবে উপহার দেওয়া যায় কি না, সেটা তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। অন্য দিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি উপহার নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য পুষ্পস্তবক দিয়েছেন মন্ত্রী। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা মন্ত্রীর এলাকার মধ্যে পড়ে। তাই প্রায়ই তিনি এখানে আসেন।’’ এর বেশি কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি।