সূচনা শেঠ। —ফাইল চিত্র।
পুলিশি জেরার মুখে অনেক কিছুই বলছেন না চার বছরের শিশুপুত্রকে হত্যায় অভিযোগ সূচনা শেঠ। সোমবার পানাজির একটি আদালতে এমনই দাবি করল গোয়া পুলিশ। গোয়া পুলিশের তরফে আরও আট দিনের জন্য সূচনাকে হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানানো হয়। আদালত অবশ্য আরও পাঁচ দিন তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার বিকেলেই সূচনার প্রথম ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
গোয়া পুলিশ এ দিন আদালতে যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে দাবি করা হয়েছে যে, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অসম্পূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন সূচনা। তাঁর বিরুদ্ধে বহু তথ্য এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগও তুলেছে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিক আদালতে বলেন, “যে অস্ত্র দিয়ে তিনি (সূচনা) নিজের কব্জি কাটার চেষ্টা করেছিলেন, সেটি আমাদের দেখিয়েছেন। কিন্তু কিছু জিনিস, যেমন যে অস্ত্র দিয়ে খুন করলেন, তা নিয়ে আমাদের কিছু বলেননি। আমরা তাঁকে এই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব।”
জিজ্ঞাসাবাদের সময় এক জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞকেও সঙ্গে রাখা হচ্ছে বলে সোমবার আদালতে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, তদন্তের কিনারা করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পুলিশের বক্তব্য শোনার পর আদালত সূচনার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকার করেন।
২০১৯ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সূচনা। ২০২০ সালে স্বামী বেঙ্কটের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় তাঁর। সম্পর্কের সেই ফাটল দিনে দিনে আরও বেড়েছিল। তার পরিণতিতে সূচনা এবং বেঙ্কট বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। কিন্তু ছেলে কার কাছে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়। কিন্তু আদালত সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই অনুমতি দিয়েছিল। তবে প্রতি সপ্তাহে রবিবার বাবাকে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলেকে নিজের কাছে রাখলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন সূচনা। সব সময়েই তাঁর মনে হত, এই বুঝি ছেলেকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করবেন বেঙ্কট! সেই আতঙ্ক থেকেই তিনি শিশুপুত্রকে খুন করেন কি না, তার কিনারা করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
সূচনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ৭ জানুয়ারি গোয়ার একটি অ্যাপার্টমেন্টে ছেলেকে খুন করে দেহ সুটকেসে ভরে ট্যাক্সি নিয়ে বেঙ্গালুরু রওনা হন। পরে ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর কর্নাটকের চিত্রদুর্গে তাঁকে গ্রেফতার করা। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, শ্বাসরোধ করে ছেলেকে খুন করেছেন তিনি। কিন্তু পরে অ্যাপার্টমেন্টের ঘরে রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যাওয়ায় অন্য সন্দেহ তৈরি হয় তদন্তকারীদের মধ্যে।