IIT-BHU Molestation Case

আইআইটি ছাত্রীকে জোর করে চুম্বন এবং বিবস্ত্র করার অভিযোগ, তোলপাড় মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী

বুধবার রাতে আইআইটি-র বিএইচইউ ক্যাম্পাসে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, বুধবার রাতে তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক প্রথমে ওই পড়ুয়ার শ্লীলতাহানি করেন এবং বলপূর্বক চুম্বন করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বারাণসী শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৪
Share:

আইআইটি-বিএইচইউ ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের আন্দোলন। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

আইআইটির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে চুম্বনের অভিযোগ উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারণসীতে। বুধবার রাতে আইআইটি-র বিএইচইউ ক্যাম্পাসে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, বুধবার রাতে তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক প্রথমে ওই পড়ুয়ার শ্লীলতাহানি করেন এবং বলপূর্বক চুম্বন করেন। পরে ওই পড়ুয়াকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের অভিযোগও উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছেন পড়ুয়ারা।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ছাত্রী আইআইটি বিএইচইউ-এর হস্টেলে থাকেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ তিনি ক্যাম্পাসের ভিতরে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। রাস্তায় এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। এর পর তাঁরা একসঙ্গে গল্প করতে করতে হাঁটছিলেন। ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা কারমান বাবা মন্দির থেকে ৩০০-৪০০ মিটার দূরে তাঁরা যখন হাঁটছিলেন সেই সময় একটি মোটরবাইকে চেপে তিন জন যুবক তাঁদের কাছে আসেন। অভিযোগ, ওই তিন যুবক প্রথমে তাঁর বন্ধুকে সরিয়ে নিয়ে যান এবং পরে তাঁকে বলপূর্বক এক কোণে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়। ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁকে জোর করে চুম্বন করা হয়। পরে তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয় বলেও অভিযোগ। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন নির্যাতিতা।

ওই ছাত্রী আরও জানিয়েছেন, মিনিট পনেরো পর ওই তিন যুবক তাঁকে ছেড়ে দিলে তিনি দৌড়ে হস্টেলের দিকে চলে যান। এক জন অধ্যাপকের সাহায্যে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের দেখতে পাওয়া যায়নি। এর পরেই ওই পড়ুয়া পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বৃহস্পতিবার সকালে হাজার হাজার পড়ুয়া বিএইচইউ চত্বরে জমায়েত করে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হন। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উন্নত নিরাপত্তার দাবি তুলে সরব হয়েছেন তাঁরা। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বেশির ভাগ এলাকায় কোনও নিরাপত্তাকর্মী থাকেন না। সব সিসি ক্যামেরাও কাজ করে না। আর সেই কারণে ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ নন বলেও বিক্ষোভকারীদের দাবি। ক্যাম্পাসের ভিতর বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পড়ুয়ারা।

এক জন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য একটি দলও গঠন করা হয়েছে।

দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসীর সাংসদ। ২০১৪-র পর ২০১৯ সালেও বারাণসী থেকেই জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভাতেও বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপির যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তাই বিজেপি শাসিত রাজ্যে আইআইটি-র মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের অভিযোগ ওঠায়, পুরো বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিরোধী কংগ্রেসও।

উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা বিচার চাই। যারা পোস্টার নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন, তাঁরা রাস্তার ছেলেমেয়ে নন। আইআইটি-বিএইচইউ-এর পড়ুয়া। ক্যাম্পাসে প্রতি দিনই মেয়েদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। কারা এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত? কেন বিএইচইউ প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? দেশের ভবিষ্যতেরা প্রতিবাদে নামতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের কথা যদি সরকার না শোনে, তা হলে আর কবে শুনবে? মহিলারা সুরক্ষিত আছেন বলে যাঁরা দাবি করেন, তাঁরা আজ কোথায়? যারা ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ স্লোগান দেন তাঁরা কোথায়? মেয়েরা নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা না পেলে লেখাপড়া করবে কী করে?”

যদিও সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্ত়ৃপক্ষ এখনও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement